১৯৭১ সালের মার্চ এপ্রিলে ঢাকা, কুমিল্লা, বরিশাল, কুড়িগ্রাম, চট্টগ্রামসহ বেশকিছু জেলখানায় হত্যাকাণ্ড হয়। এ গণহত্যায় ঢাকা জেলে ৭ জন হত্যা, ৩০ জন আহত, কুড়িগ্রামে ৬ জন, চট্টগ্রামে ২ জন, কুমিল্লা জেলে ৩ জন এবং বরিশাল জেলে ২ বাঙালি বন্দি হত্যার শিকার হন। তন্মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলে ৬ ও চট্টগ্রাম জেলে ২ জন কারারক্ষী শহিদ হন। ঢাকাসহ বেশকিছু জেলে মার্চ মাসেই বিদ্রোহ হয়। যা প্রশাসন দমন করতে কিছুটা সফল হয়। এই দমন পীড়নে ঢাকা, কুমিল্লা, বরিশাল জেলে ব্যাপক অত্যাচার হয়। সেখানে বিদ্রোহ দমনে ব্যাপক গোলাগুলি হয়। বিপুল পরিমাণ হতাহত হয়। কুষ্টিয়া জেলে বাঙালি অবাঙালি সংঘাতে সেখানে অনেক হতাহত হয়। মুক্তিযুদ্ধে জেলখানাগুলোর বিদ্রোহ, অস্ত্রের ব্যবহার কোনদিকে ছিল? জেলখানায় সংঘটিত বিষয়গুলো ইতিহাসে সামান্যই উদ্ধৃত হয়েছে। '১৯৭১ কারাবিদ্রোহ ও গণহত্যা' বইটি রচনায় প্রত্যক্ষ সাক্ষীসহ কিছু পুস্তক, পত্রিকা ও ব্যক্তির সহযোগিতা নেয়া হয়েছে। সে সকল পত্রিকার সম্পাদক, প্রতিবেদক, লেখক ও প্রকাশকদের ঋণ স্বীকার করছি। জেলখানায় বিদ্রোহ ও গণহত্যার পাশাপাশি জনপদগুলোর গঠন বিকাশ, জেলখানা ও আইন আদালতের ইতিহাস যুক্ত করা হয়েছে। যার মাধ্যমে পাঠক জেলখানা তৈরির ছোট্ট ইতিহাস জানতে পারবেন। '১৯৭১ কারাবিদ্রোহ ও গণহত্যা' বইটির বানান শুদ্ধকরণে সহধর্মিণী অধ্যাপক নাজমুন নাহার সুইটির সহযোগিতা অনস্বীকার্য। প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন কবি ও সংস্কৃতি সংগঠক ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি জ্যোতি আহমদসহ মুক্তিযোদ্ধা ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। পুস্তকটি প্রকাশে আগ্রহের সাথে দায়িত্ব নিয়েছেন চারুলিপি প্রকাশনের প্রকাশক হুমায়ূন কবীর। তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। পাঠক সমাজে পুস্তকটি সমাদৃত হলে মনে করবো শ্রম সার্থক হয়েছে।