কিশোরকাল জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়। জীবনের এই সন্ধিক্ষণে এসেই হঠাৎই বদলে যায় চিন্তা ও চেতনার ধারা। ছোটদের পৃথিবী ছেড়ে বড়দের পৃথিবীর আহ্বান যেন কানের কাছে এসে আছড়ে পড়ে। একজন শ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে গড়ে তুলতে হলে কিশোর- কিশোরদের সামনে শ্রেষ্ঠ জীবনীগুলোর বাস্তব প্রতিফলনের বিকল্প আর কিছু নেই। বঙ্গবন্ধুর কৈশোর জীবন অনন্য সাধারণ বর্ণাঢ্য উপমায় সমৃদ্ধ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি তিনি। মেধা-মননশীলতা, মানবিকতা, মানবপ্রেম, দেশপ্রেম, ধৈর্য, কষ্টসহিষ্ণুতা, দূরদর্শিতা, নেতৃত্বসুলভ গুণাবলি, পরোপকারী মনোভাব, সাংগঠনিক দক্ষতা ইত্যাদি গুণাবলিতে উদ্ভাসিত ছিল তাঁর চরিত্র। তাঁর কিশোরকালে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছিল যে, তিনিই হবেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কর্ণধার - দুঃসময়ের কাণ্ডারি। গ্রন্থটিতে জাতির জনকের কৈশোরকালীন উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলি এবং তাঁর অসাধারণ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে। অনবদ্য ভাষায় তাঁর কৈশোরকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ছেলেবেলা হতেই সততা, সত্যবাদিতা এবং সৎসাহসের অনুসারী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। অনেক প্রতীক্ষিত পাকিস্তানের (পূর্ব-পাকিস্তান) স্বাধীনতা – যা বাঙালির জন্য কোনো মঙ্গল ও উন্নয়নের বার্তা নিয়ে আসেনি-দূরদর্শী ও মেধাবী মুজিব সবার প্রথমে এই সত্য অনুধাবন করেন। ১৯৪৭ সালে বঙ্গবন্ধু তখন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ছত্রছায়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে। পরবর্তীতে এই অসাধারণ নেতার ৭ মার্চের বক্তৃতায় বাঙালিকে উদ্দীপ্ত করেছিলেন মাতৃভূমির স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে। তিনি ছিলেন স্বপ্নদ্রষ্টা। সবাইকে সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্নে অনুপ্রাণিত করার মতো এক অলৌকিক ক্ষমতা ছিল তাঁর। দুঃখী ও নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের মনে হাসি ফোটাতে, তাদের জীবনকে উন্নয়নের পথে নিতে তিনি যে আদর্শ ও মানবিকতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন তা অতুলনীয় এবং অনুসরণীয়। শুধু সংগ্রামক্লিষ্ট রাজনীতিই নয়-স্বাধীনতা-উত্তর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনেও তিনি অসাধারণ ভূমিকা রেখেছিলেন- যা তাঁর অনন্য মেধা, সাংগঠনিক ক্ষমতা এবং দূরদর্শিতারই স্পষ্ট স্বাক্ষর বহন করে। সে সময় সুপরিকল্পিত অনেক অর্থনৈতিক কার্যক্রমেরও সঠিক বাস্তবায়ন করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে তাঁর সেই মহতী উদ্যোগের চিরবহমান ধারায় আজো উদ্ভাসিত তাঁরই স্বপ্ন 'সোনার বাংলাদেশ'। এই গ্রন্থটির তথ্যাবলি ইতিহাসবিদদের প্রকাশিত বিভিন্ন প্রবন্ধ এবং রচনা হতে নেওয়া হয়েছে। আমার কৃতজ্ঞতা তাঁদের প্রতি। যাঁদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণায় বইটি শুরু এবং শেষ করেছি, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা তাঁদের প্রতি
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমা বেগম নাজু একজন মিলিটারি চিকিৎসক তিনি। আর্মি মেডিকেল কোরের হেলথ কেয়ার ম্যানেজমেন্টের প্রথম নারী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। সামরিক চিকিৎসক হলেও শরীর আর মনের একাক্মীকরণে বেছে নিয়েছেন বর্ণিল বর্ণসম্ভার। খাতার পাতায় নয়-বর্ণসম্ভারের খোঁজে ছোটেন আকাশের অবাধ নীলে, সবুজ পাতায়, নরম রোদের বৈকালিকী সূর্যকণায়। এভাবেই লেখক হয়ে ওঠা তাঁর। সাহিত্যের সব শাখাতেই রয়েছে একাধিক প্রকাশনা তাঁর। পেয়েছেন অসংখ্য সম্মাননা ও পুরস্কার। তাঁর প্রিয় সান্নিধ্য লেখালেখিকে পাশে রেখেই কাটাতে চান জীবনের প্রতিটি অনুক্ষণ।