ছোট ছোট উপদেশমূলক আখ্যান, যেগুলো আধুনিক ছোটগল্পের সূচনারুপ। এই ধরনের আখ্যান প্রথম আমরা পাই ‘জাতকের গল্প’ -তে। বলা হয়ে থাকে, গৌতম বুদ্ধ তাঁর শিষ্যদের ধর্মীয় শিক্ষা এবং দুঃখ- মৃত্যু-জরা-পুনর্জন্ম থেকে নির্বানলাভের উপায় সম্পর্কে উপদেশ দান করতেন এইসব ছোট ছোট আখ্যানের মাধ্যমে। তাঁর অনুসারীরা সেইসব উপদেশমূলক আখ্যানগুলোকে একত্রিত করে নাম দিয়েছেন ‘জাতকের গল্প’। এই পদ্ধতির কার্যকারিতা উপলব্ধি করতে পেরে অচিরেই হিন্দু ঋষিগণ তাদের ধর্মোপদেশ দান করা শুরু করলেন আখ্যানের মাধ্যমে। তাদের উপদেশগুলো সংকলিত হয়েছে ‘হিতোপদেশ’ এবং ‘পঞ্চতন্ত্র’। এখন সারা পৃথিবীতে ব্যাপকভাবে প্রচারিত ‘ঈশপের গল্প’ আসলে আমাদের উপমহাদেশের ‘জাতকের গল্প’-এর মতোই লেখা ইউরোপীয় আখ্যান। তাদের সকলেরই উদ্দেশ্য এক। তারা আসলে উপদেশের বাহন। ফারহানা সারমিনের দুই জিরাফ ও লোভী বাঘ, বল্টুর উচিৎ শিক্ষা, সুশ্রী কুশ্রী, খেঁচুর হাঁচু, রাজকুমার নায়লা গল্পগুলোতে জিরাফ, শেয়াল, ফুল, মুরগী, রাজা, ব্যাঙ, রাক্ষস, রাজকুমারী, মায়ার রাজ্য, ইঁদুর, বিড়াল এক একটি চরিত্র। তারা কথা বলে মানুষেরই মত; তাদের আচরনে মানুষের প্রতিচ্ছবি। ঈশপ সেই কবে কোনকালে ‘পশু’ গল্পে মানুষরুপী পশুর কথা বলে গেছেন। লেখিকা একালে এসে বলছেন মানুষরুপী জিরাফ, শেয়াল ও অন্যান্যদের গল্প। গল্পগুলো পড়ে অথবা শুনে শিশুরা আনন্দ পাবে নিঃসন্দেহে। অবচেতনে গড়ে উঠেবে ভালো- মন্দ, ন্যায়- অন্যায়, আলো- অন্ধকারের মধ্যে পার্থক্য করার বোধ এবং প্রকৃত ভালোবাসার উপলব্ধি। সাজিদ মোহন শিশুসাহিত্যিক