ভূমিকা বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি এবং বাংলার ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জনে তৎকালীন সংগ্রাম-আন্দোলন, আত্মত্যাগ, ঘটনাবলির তাৎপর্য ও অবদান অনস্বীকার্য। সেসময়ে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল আপামর জনতা, বাংলার বীর সন্তানেরা তাদের দেশের জন্য, মাতৃভাষার জন্য, স্বাধীনতার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এমনকি নিজের জীবন বিসর্জন দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি। চেনা-অচেনা লাখো নারী-পুরুষের আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি। আমরা পেয়েছি লাল-সবুজের স্বাধীন বাংলাদেশ। পেয়েছি বিশে^র বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবার মতো গৌরবময় ইতিহাস-সম্মান। বীর সন্তানদের স্মরণে, তাদের সম্মানার্থে, গৌরবগাঁথা বর্ণনায়, স্মৃতিচারণায় যুগে যুগে অসংখ্য কবি-সাহিত্যিক দুহাতে লিখেছেন। বাংলা সাহিত্যের বিশাল একটা অংশজুড়ে রয়েছে তাদের সেই রচনা, সাহিত্যকর্ম। যা অমরত্ব লাভ করেছে কালের পরিক্রমায়। ‘নিঃশঙ্ক মানবী’ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-আশ্রিত উপন্যাস। ধরন অনুযায়ী এটি ফিকশন বা কাল্পনিক হলেও, কাহিনির চরিত্র ও ঘটনাবলি বাস্তবতা থেকে অনুপ্রাণিত। একাত্তরের প্রেক্ষাপটে কিছু সাধারণ মানুষের জীবন সংগ্রামকে ঘিরে উপন্যাসের মূল কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। যেখানে প্রেম-ভালোবাসা, যুদ্ধবিগ্রহ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, বেঁচে থাকার লড়াই, আত্মত্যাগ, দেশপ্রেম একই সুতোয় গাঁথা লাল-সবুজের উষ্ণ চাদরে। যার উষ্ণতায় পাঠকের শরীর-মন দুটোই তৃপ্ত হবে। বর্তমান প্রজন্মের পাঠক-পাঠিকাদের রুচিকে প্রাধান্য দিয়ে লেখা এই উপন্যাসটি লেখিকা ‘নিশাত তাসনিম কানিজ’ এর প্রথম বই। প্রকাশনা জগতে তার পদচারণাকে আমরা স্বাগত জানাই। অক্ষরবৃত্ত বরাবরই নতুন ও তরুণ লেখক- লেখিকাদেরকে সাহিত্য চর্চায় অনুপ্রাণিত এবং উৎসাহিত করে থাকে। সুসাহিত্য ও মানসম্মত বই আমাদের প্রথম শর্ত। তারই ধারাবাহিকতায় ‘নিঃশঙ্ক মানবী’ পাঠকের হাতে পৌঁছে যাবে, পাঠকপ্রিয়তা লাভ করবে; এটাই প্রত্যাশা। কাজী জোহেব নির্বাহী পরিচালক, অক্ষরবৃত্ত