মুজিব শতবর্ষের শুভ সূচনায় বাংলা একাডেমি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একশত গ্রন্থ রচনার যে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করে, সে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমার উপর বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে লেখার দায়িত্ব পড়ে। বৈশ্বিক মহামারির ফলে আমার পারিবারিক জীবনের বড় ধরনের বিপর্যয়ে এই মহতী কার্যে কিছুটা বিলম্ব হলেও অবশেষে বঙ্গবন্ধুর এই মহান ভাষণের উপর আমার গভীর অন্বেষণ ও অনুধ্যান '৭ই মার্চের ভাষণ: একটি জাতির কথামালা' শিরোনামে গ্রন্থবদ্ধরূপ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালির হাজার বছরের লালিত ঐতিহ্যিক, রাজনৈতিক, আর্থিক ও সাংস্কৃতিক-সাহিত্যিক অঙ্গনকে নানান দিক দিয়ে উদ্ভাসিত করেছে। বর্তমান গ্রন্থে বাঙালি জাতিসত্তার আত্মপরিচয় থেকে শুরু করে বাঙালি সংস্কৃতির সমন্বয়বাদী অসাম্প্রদায়িক চেতনায় জাতিসত্তার বিকাশ, ভাষার প্রশ্নে জাতীয়তাবাদী চেতনার গ্রন্থি উন্মোচন, আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ সংগ্রাম এবং বাঙালির স্বাধীন ভূখণ্ডের আকাঙ্ক্ষায় সংগ্রামের চূড়ান্ত পরিণতির ডাক কীভাবে ৭ই মার্চের ভাষণে উঠে এসেছে, তা পাঁচটি অধ্যায়ে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করি আমার এই পরিশ্রম পাঠকের মনে চিন্তার খোরাক যোগাবে এবং গবেষকদের বহুমাত্রিক গবেষণার দ্বার উন্মোচন করবে।
Shirin Akhter, সংগ্রামী এক নারীমুখ। বাংলাদেশের নারী অধিকারসহ মানবাধিকারের এক নিরলসকর্মী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যায় থেকে অনার্সসহ মাস্টার্স। স্কুলজীবনেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি।। ছিলেন ছাত্রলীগ বদরুন্নেসা কলেজ কমিটির সভাপতি। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। ডাকসু নির্বাচনে ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয় শামসুন্নাহার হল ছাত্রী সংসদের সমাজ সেবা সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৫ সালে সামরিক আদালতে দুই বছর সশ্রম কারাভোগকারী। ১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে শ্রমিক জোট, স্কপ, ঐক্যবদ্ধ নারী সমাজের কেন্দ্রীয় নেত্রী হিসেবে ভূমিকা রাখেন। দীর্ঘ ধারাবাহিক-বর্ণিল রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী শিরীন আখতারের রযেছে ব্যাপক সাংগঠনিক দক্ষতা। জাসদ ও বাংলাদেশের ছাত্রলীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। নারী সমঅধিকার ও মর্যাদার লক্ষ্যে ‘কর্মজীবী নারী’ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। বৈশ্বিক রাজনীতি ও সমাজ-সংস্কৃতির অবিজ্ঞতার লক্ষ্যে তিনি বেইজিং-এ ৪র্থ বিশ্বা নারী সম্মেলনসহ রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে আইএলও কনভেনশন (১৯৯৬, ৯৮, ২০১১) এবং রাজনৈতিক-সাংগঠনিক কাজে আমেরিকা, জার্মানি, ইল্যান্ড, কানাড, নরওয়ে প্রভৃতি দেশ ভ্রমণ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি স্বামী মনিরুল ইসলাম (মার্শাল মনি) বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের একজন প্রথম সাারির সংগঠক। একমাত্র পুত্র অমিত মনসিজ পেশায় চিকিৎসক।