বইটি চারটি অধ্যায়ে বিভক্ত। প্রথম অধ্যায়ে রোজার বিধিবিধান, রোজার ইতিহাস, বিভিন্ন ধর্মে রোজা/উপবাস এবং রমজানের আনুষঙ্গিক বৈশ্বিক তথ্যাবলী আলোচিত হয়েছে। রমজান মুসলমানদের জীবনে পরিবর্তন আনার মোক্ষম সুযোগ সৃষ্টি করে। রোজা নিছকই উপবাস থাকা, পানাহার ও কামাচার বর্জনের নাম নয়; এর বিশেষ তাৎপর্য ও দর্শন রয়েছে। রয়েছে এর দৈহিক, আত্মিক, নৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উপকারিতা। দ্বিতীয় অধ্যায়ে রোজার কথিত স্বাস্থ্যঝুঁকির মিথ ও নানাবিধ বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার জবাব দেয়া হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়ের বিষয়বস্তু হচ্ছে বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে রোজা ধর্মীয় বিধান হলেও বিজ্ঞানভিত্তিক। রমজান গবেষণা একটি নতুন এবং দ্রুত সম্প্রসারিত ক্ষেত্র। আন্তর্জাতিক গবেষণায় রোজার স্বপক্ষে বৈজ্ঞানিক তথ্যাবলী ও বিশেষজ্ঞদের ভিডিও বার্তা রয়েছে। ২০২২ সালের আগস্টে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে ১৯১৫টি রমজান-প্রাসঙ্গিক গবেষণা রয়েছে যেসব প্রধানত বিপাকীয় স্বাস্থ্য, শরীরবিদ্যা, ডায়াবেটিস, হার্ট, ক্যান্সার, জনস্বাস্থ্য, মাতৃত্ব, মানসিক ও আচরণগত পরিবর্তন ইত্যাদি সংক্রান্ত। প্রকাশিত গবেষণায় রোজার গুরুত্বপূর্ণ ক্লিনিকাল প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে। চতুর্থ অধ্যায়ে অটোফেজি প্রক্রিয়া ও রোজা নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ২০১৬ সালে অটোফেজি গবেষক জাপানের অধ্যাপক ইয়োশিনোরি ওহসুমি চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী হন। অটোফেজি একটি প্রক্রিয়া যা বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সুবিধার সাথে যুক্ত। এটি সমস্ত কোষে সক্রিয় কিন্তু চাপ বা পুষ্টির বঞ্চনার (রোজা বা অনাহার) প্রতিক্রিয়ায় বৃদ্ধি পায়। রোজা অটোফেজির মূল সক্রিয়কারী। ইসলামবিদ্বেষী কিছু ব্লগার রোজা ও অটোফেজি নিয়ে অভিযোগ আকারে নানা রকম প্রশ্ন এবং তা নিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে মুসলিমদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে যা বুদ্ধিবৃত্তিক না হয়ে অযৌক্তিক ও ভ্রান্ত। এই বইয়ে এসব স্বঘোষিত ‘মুক্তমনা’ বা সংশয়বাদীদের অপপ্রচারের যথাযথ উত্তর প্রদান ও রোজার স্বাস্থ্যগত বৈজ্ঞানিক উপযোগিতা বর্ণনা করা হয়েছে। উদ্দেশ্য, মুসলমানদেরকে রোজার বিধি বিধান পালনে আগ্রহী করে তোলা আর অবিশ্বাসীদের মনে বিশ্বাসের আলো মেলে ধরা।