কবিতাই কবি’র আশার নীলজ্যোতি কবিতাই কবির জীবন। কবিতাই কবির দিবস-রজনী। মহাকালের পথে কবিতাই কবির সত্য সারথী। কবির দিন শুরু হয় কবিতার ঢালি সাজিয়ে। ঘুমুতে যাবার আগেও কবি কবিতার প্রার্থনায় মগ্ন থাকেন। কবির সঙ্গে কবিতার এই ঘোর নিরন্তর চিরকালিন। কবি কখনো প্রেমে কখনো বিরহে কবিতারই জপমালা জপেন। ইহ জাগতিক ভাব-ভাবনা-বাস্তবতাও কবিকে ভাবায়, কবি হয়ে উঠতে, কলম চালাতে ইন্ধন দেয়। সকল সরল কবিতাই আবার উপমা, সুষমা, উৎপেক্ষা মন্ডিত হয় না- হয়ে ওঠে না। কিছু পংক্তিতে কবি যেন চেতন অবচেতনে দেশের বর্তমান চালচিত্র, দিন মজুর আর ব্যথিতের জীবন ছবি, ঘুর্ণায়মান পৃথিবীর আগ্রাসন, ন্যায় বিচার ও শোষণের রাজটিকা বসিয়ে দেন। সমাজের অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে কবির কলম হয়ে ওঠে প্রতিবাদের হাতিয়ার। কবির কোন ভয় নেই। ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠায় যুগেযুগে শত সহস্র মূনীঋষি তাদের প্রতিবাদ প্রতিলিপি জানিয়ে গেছেন, জাগিয়েছেন মানব মুক্তির প্রেরণা। এই বইয়ের কবিতা নির্বাচনে ক্ষুধা, দারিদ্র, দিন মজুরের কষ্ট, অনিয়ম, অন্যায়, ভাষা সংগ্রাম, স্বাধীনতা ও মুক্তিকামী মানবতার প্রতিবাদী ছবিই মূখ্য হয়ে ধরা দিয়েছে। কিছু কবিতায় কবি কে প্রেমে অপ্রেমে বিরহ- যাপনে গা ভাসাতে দেখেছি। আশার নীলজ্যোতি বইয়ের একটি কবিতার দু’ চরণও যদি আলোচিত হয়, মানুষের কল্যাণে নিবেদন তৈরি করে তবেই কবির যাবতীয় শ্রম সার্থক হবে। নতুন প্রজন্মের তরুণ এই কবির জন্য আমার হৃদয়ে অগাধ জায়গা। প্রচ্ছন্ন চলাফেরা চেনা জানায় তার কবি চরিত্রটি আমাকে মুগ্ধ করে। আমি এই কবির নতুন বই ও তার সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করি। কবি মাসুদ রানা লাল’ এর কবিতার একজন একনিষ্ঠ পাঠক আমি। কোথাও ওর নাম বা লেখা দেখতে পেলে আমি মমতা দিয়ে পড়ি। ওর কবিতায় দ্রোহের রক্ত কনিকা উদ্বেলিত হয়, হিম শীতল বরফ গলে জাগ্রত হয় বিপ্লবী সত্ত্বা। এগিয়ে যাও তুমি বাংলার মেঠোপথ ধরে। কবিতা হাতে দাঁড়িয়ে সোনালী ডানার কোন এক সুহাসিনি। সেই অধরাকে স্পর্শ করো তুমি- গ্রহণ করো কবিতার অমীয় সুধা।