সভ্যতার উন্মেষ মিশর,ব ̈াবিলন, মেসোপটামিয়া, অ্যাসিরিয়া, লিডিয়া, ভারত ও চীন হতে। মিশর বাদে এসব দেশ এশিয়া মহাদেশ তথা পূর্ব গোলার্ধে অবস্থিত। দিনে দিনে এসব সভ ̈তার বিকাশ ইউরোপের সমুদ্র পাড়ের দেশ ̧লোতে ছড়িয়ে পড়ে। ভারতবর্ষীয় এবং চীনা অঞ্চল ছিল মশলা, সিল্ক এবং রেশমের জন্য প্রসিদ্ধ। খাদ্যে মশলার ব্যবহারে খাদ্যের স্বাদ বাড়ানো এবং মাংস দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যেত। রেশম ও সিল্ক বনেদি মহিলাদের সৌন্দর্য উপকরণের দুর্লভ সামগ্রী হিসেবে বিবেচিত হত। ভারতবর্ষীয়/চীন অঞ্চলের মশলা, রেশম ও সিল্ক খুব কম দামে কিনে ইউরোপীয় বনিকেরা অনেক বেশি দামে বিক্রি করে রমরমা বানিজ ̈ করত। এই ব্যবসা নিয়ে ইউরোপীয় জাতিগুলোর মধ্যে বিস্তর প্রতিযোগিতা ছিল। প্রথম দিকে জলযানে ভারতবর্ষীয় অঞ্চলে যাওয়ার সুনির্দিস্ট কোনো রুট ছিল না। যন্ত্রচালিত বাষ্পীয় পোত তখনো আবিম্কার হয়নি। এজন্য বেশিভাগ যাত্রাই স্থল পথ এবং প্রায়ই দাঁড় টানা এবং পাল খাটানো জাহাজে করতে হত। পূর্ব এবং পশ্চিম গোলার্ধের মাঝে আছে বৈচিত্রে ভরপুর, রহস ̈ময় আটলান্টিক মহাসাগর। এই সহাসাগর আয়তনে প্রশান্ত মহাসাগরের অর্ধেকের কম হলেও এর ছিল রকমারী বৈশিষ্ট। এর পানির রং অধিকাংশ অঞ্চলেই কালো বা গাঢ নীল। এই জন্য এই সাগরকে কালো সাগর নামে ডাকা হয়। সাগরে যে ঢেউ ও স্রোত হয় তা এক এক স্থানে এক এক রকম। ঘন শৈবাল এবং ডুবো পাহাড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর বিভিন্ন এলাকায়। কুয়াশা, ঝড়-ঝঞ্ঝা এই সাগরে লেগেই থাকে। এইসব কারণে সাধারণ জাহাজ নিয়ে এই মহাসাগর পাড়ি দেয়ার ঝুকি মানুষ অনেক দিন হয় নেয়নি। স্থল পথেও পুব হতে পশ্চিম গোলার্ধে যাওয়া-আসা এক প্রকার অসাধ্য ছিল। ফলে, জলপথ ব ̈তীত আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে পশ্চিম গোলার্ধে পৌাঁছা সম্ভব হতনা।