“ছেলে ও তাদের বউরা রমেজার মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করে। অপেক্ষা করতে করতে তারাও ধৈর্যহারা হয়ে পড়ে। চলৎশক্তিহীন মৃতপ্রায় মানুষটিকে নিয়ে কী করা যায়, সে বিষয়ে অবশেষে একদিন তারা সবাই মিলে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। একদিন বড়ো রাস্তার পাশে সরকারি ডাস্টবিনের কাছে একটি বস্তা পড়ে থাকতে দেখে টোকাইরা সেটা খুলে দেখে বস্তার ভিতর একজন মানুষ! মানুষটা তখনো জীবিত। টোকাইরা বিষয়টি দ্রæত টহল পুলিশকে জানায়। পুলিশ মানুষটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে। পরের দিন দেশের প্রায় প্রতিটি জাতীয় পত্রিকার প্রথম পাতায় সংবাদটি ছাপা হয়। এরপর থেকে অনেক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই তাকে রমেজাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন। তার নিজের ছেলেরা তাকে বস্তায় ভরে ডাস্টবিনে ফেলে দিলেও পরের ছেলেরা তাকে পরম মমতায় বুকে জড়িয়ে নিয়েছে। রমেজা বেওয়া তাদের সবাইকে চোখের পানিতে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। কারণ কথা বলার মতো শক্তি তার নেই।” উদ্ধৃতাংশটি মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের ‘অকৃতজ্ঞ’ গল্পটির। জাহাঙ্গীর আলমের ‘অন্তরালে অস্তরাগ’ গল্পগ্রন্থটি প্রেম-ভালোবাসা, সাধারণ মানুষের জীবনসংগ্রাম, সামাজিক অবক্ষয়সহ শ্রেণি বৈষম্যের কথা উঠে এসেছে। বইটিতে ১২টি গল্প স্থান পেয়েছে। প্রতিটি গল্প অত্যন্ত সাবলীল ভাষায় লিখিত। গল্পগুলো এক নিঃশ্বাসে পড়ে যাওয়ার মতো। আশা করছি বইটি পাঠক মহলের সাড়া জাগাতে সক্ষম হবে। -প্রকাশক
আমি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, ঝিনাইদহ সদরের এক নিভৃত গ্রামে আমার জন্ম। শৈশব কেটেছে গ্রামের বাড়ীতে দিগন্তজোড়া সবুজ মাঠে খেলা করে আর বিলে মাছ শিকার করে। উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের জন্য জেলা সদরে নানা বাড়ীতে চলে আসি। উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই আমি প্রচুর বই পড়তে শুরু করি। আর লেখালেখির শখটাও তখন থেকেই। তবে সে সব লেখা কোথাও প্রকাশ করা হয়নি। ঢাকা আসার পর ফেসবুকের সাথে পরিচয় এবং প্রণয়। তারপর প্রথমআলো ব্লগে লেখালেখি। মূলত আমার লেখক সত্ত্বার প্রকাশ প্রথমআলো ব্লগ থেকেই। প্রথমআলো ব্লগ সংকলন, জলছবি বাতায়নের একাধিক সংখ্যায় আমার ছোট গল্প প্রকাশিত হয়েছে। এক সময় প্রথমআলো ব্লগ বন্ধ হয়ে গেলে ব্লগের লেখাগুলো একত্র করে একটি বই ছাপা হয়-যার নাম আপনালয়।