বারো পর্যন্ত সে সাদামনের শিশু। তেরো থেকেই শুরু হয় তার রহস্যময় কিশোর কাল। অন্তত আঠারো পর্যন্ত টক মিষ্টি ঝালে ভরা। তারপর তো শুরু দীপ্ত তারুণ্য। স্বপ্ন ক্রোধ হতাশা আর প্রত্যাশায় সামনে এগিয়ে চলা। শৈশব উড়তে চায় রঙিন বেলুনে। মা-বাবা, ভাইবোনদের নিয়ে ধরা থাকে সে বেলুনের সুতো। বেশিদূর এগোয় না। চেনা জানা পরিবেশের ভেতরেই তার যত ওড়াওড়ি। কৈশোর একা, স্বাধীন ও স্বতন্ত্র হয়ে ওঠার শুরুর কাল। শৈশবের গ-ি পেরিয়ে জীবনের নতুন অচেনা সীমানায় পা রাখা। কিশোর কবিতা মানে যেমন শিশুতোষ ছড়া-কবিতা নয়, তেমনি নয় তারুণ্য বা তারুণ্যোত্তর জীবন-আনন্দ বা যন্ত্রণাও। পার্থক্য রয়েছে কবিতার প্রকাশভঙ্গিতেও। কিশোর কবিতা হলো কৈশোরিক বোধগম্যতায় আনন্দ-বেদনা, রস- রহস্যময়তার সটান নিটোল প্রকাশ, বিশেষ করে সমিল সছন্দ শব্দ-বাক্যের ধারাপাত। ‘মায়াবী দিনের খাতা’র কবিতাগুলো কৈশোরিক বোধগম্যতায় সে আনন্দ- বেদনা, রস-রহস্যময়তাকে ধারণ করেই লেখা হয়েছে। এই কিশোর আটপৌরে কিশোর নয়। কখনো সে মেঘনা পাড়ে বাঁশি বাজায়, কখনো আকাশের সাথে কথা বলে, কখনো বা চিহ্নিত করে সমাজবাস্তবতাকে। জীবনে নানা টানাপড়েন ওকে উদ্বিগ্ন করে। তবু সে পথ হারায় না। তার ‘পথ চলে গেছে সীমানা ছাড়িয়ে স্বপ্নের সৈকতে’।
সাংবাদিক ও লেখক মাসুদ আনোয়ার বাংলাদেশের স্বনামধন্য সেবা প্রকাশনীর সেরা লেখকদের একজন। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ২০ এরও বেশি। জাতীয় দৈনিক সমকালের বার্তা বিভাগে বর্তমানে কর্মরত। বিডিনিউজ ও বাংলাট্রিবিউনসহ বেশকিছু অনলাইনে কলাম লিখে থাকেন। তার ভাষা সহজ সরল ও সাবলীল। প্রকাশভঙ্গি স্বতঃস্ফূর্ত। লেখালেখির শুরু ছড়া দিয়ে হলেও অচিরেই কবিতা, গল্প ও উপন্যাসসহ সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। সেবা প্রকাশনীর ওয়েস্টার্ন ক্যাটাগরিতে এ পর্যন্ত লেখা বইয়ের সংখ্য ১৬টি। লিখে থাকেন শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী পাঠকদের জন্যে। এরই মধ্যে লেখালেখিতে নিজের একটা স্বতন্ত্র ধারা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। তার অনুবাদ ঝরঝরে, সাবলীল ও সুখপাঠ্য। মূল বইয়ের বক্তব্যকে আত্মস্থ করে নিজের ভাষায় প্রকাশ করাই তার অনন্য বৈশিষ্ট্য।