লেখকের কথা- ‘ফিতনার মোহজাল থেকে আত্মার সুরক্ষা! হয়তো মলাটবদ্ধ হয়েছে কতক শব্দ সমুষ্টির। প্রতিটি কথায় যেন আন্দোলন অধঃপতিত জাতির মুক্তির।’ প্রতিটি জাতির হৃৎপিণ্ড তরুণ প্রজন্ম। কোনো জাতিকে ধ্বংস করতে চাইলে তাদের যুবসমাজকে বিপদগামী করাই যথেষ্ট। যুগ যুগ ধরে পশ্চিমা বিশ্ব টার্গেট করে আসছে মুসলিম তরুণ প্রজন্মকে। তারা আজ অনেকটা সফল। যার ফলে আমাদের সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে মিশে আছে বিজাতীয় সংস্কৃতি। কারণ, পশ্চিমা বিশ্বের ভয়াল থাবায় মুষ্টিবদ্ধ হয়ে আছে আজ আমাদের অধিকাংশ যুবক-যুবতী। ওদের মনোহর কথায় নাচছে প্রতিনিয়ত। ভুলে গিয়েছে কে তাদের শত্রু-মিত্র। পশ্চিমা ফ্রি-কালচার সংস্কৃতিই যেন তাদের জীবনের চরম সফলতার বস্তু। দেখতে মুসলিম সন্তান মনে হলেও আমাদের চালচলন অনেকটা বিজাতীয়। পশ্চিমা ফ্রি-মাইন্ড কালচার মিশে গেছে আমাদের মাঝে ওতপ্রোতভাবে। সব যেন নাম-কা-ওয়াস্তে মুসলিম। চালচালন এতটাই নাজেহাল, মাঝে মাঝে বুঝাই মুশকিল—আসলেই কি এরা মুসলিম সন্তান! হয়তো কলমের আকৃতি দেখতে অনেকটা ক্ষুদ্র, কিন্তু তার প্রভাব এটাম বোমা থেকেও ভয়ংকর। তাই আজ পশ্চিমা বিশ্ব কলমশক্তিকে পিছে লাগিয়েছে মুসলিম তরুণ প্রজন্মের। এরা প্রতিনিয়ত কলম দিয়ে খেলছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে। কীভাবে চরিত্র ধ্বংস করা যায় মুসলিম সন্তানদের, এটাই যেন তাদের মূল লক্ষ্য। প্রতিনিয়ত লিখে যাচ্ছে অশ্লীল গল্প, কাব্য, উপন্যাস। এতে পিছিয়ে নেই নামধারী কতক মুসলিম। এরা প্রতিনিয়ত কলমের কালিতে ধ্বংসের হলি খেলছে মুসলিম ছেলে-মেয়েদের চরিত্র হরণে। অশ্লীলতার সবকিছু চলছে সাহিত্যের আবরণে। সুন্দর প্রচ্ছদের ভেতর চলছে রমরমা অশ্লীলতা। আবার এরই নাম দিয়েছে বাকস্বাধীনতা। আপনি একটি অশ্লীল গল্প, কাব্য, উপন্যাস পড়বেন আর আপনার মাঝে যৌনতার চাহিদা বাড়বে না—তা কী করে হয়? তাই ইচ্ছে করেই সাহিত্যে আমদানি করছে যৌনতা। প্রতিটি মুসলিম তরুণের চরিত্র ধ্বংসের মাঝেই যেন মিলে তাদের সফলতা। ফলে কী হচ্ছে? সমাজে বাড়ছে ধোঁকা। বাড়ছে ছেলে-মেয়ে বন্ধুত্বের আবডালে অবৈধ সম্পর্ক, যা স্পষ্টত জেনা। সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে আজ ছড়িয়েছে অশ্লীলতা। আজ নারীরা কোথাও নিরাপদে নেই। কারণ, আমাদের লোপ পেয়েছে নৈতিকতা। হারাম রিলেশন নামক অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে স্বেচ্ছায় ধর্ষিতা হচ্ছি প্রতিনিয়ত। সবকিছু হারিয়ে মরছি, কাঁদছি, না হয় করছি মৃত্যুকামনা; যা সম্পূর্ণ হারাম। আজ অবৈধ প্রেমে এতটাই হাবুডুবু খাচ্ছি, যার ফলে বৈধ সম্পর্কগুলো আমাদের কাছে হয়ে উঠেছে ভীষণ তিক্ত। নিজের প্রিয়জনকে ভুলে মত্ত হয়েছি পরকীয়া নামক জঘন্য অপরাধে। যার শেষ পরিণতি মিলে সম্পর্ক বিচ্ছেদে। এমন সব ফিতনার উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে বইটির প্রথম ভাগ। যা আমাদের ফিতনায় ফেলে ঈমান নষ্ট করে। দিল থেকে দূর করে দেয় আমলের পরিবেশ। ফিতনায় পড়ে একটা সময় দিল হাহাকার করে ওঠে। আমরা হতাশায় ভেঙে পড়ি। মনে হয়, আমাদের যেন মুক্তির উপায় নেই। আজ আমাদের দিলগুলো ক্লান্ত। ভেঙে পড়েছে ভেতরকার আত্মা। ভেঙে পড়া দিলকে ফের সতেজ করতে আত্মার সুরক্ষা ছাড়া উপায় কী? বইয়ের শেষ অংশে থাকছে ফিতনায় পড়ে গেলে কিংবা না পাওয়া কোনো আঘাতে হতাশায় ডুবে গেলে তা থেকে উত্তরণের পথ। দেখানো হয়েছে কীভাবে করা যাবে আত্মার সুরক্ষা। আশা করি, পাঠক বইটি পাঠে একদিকে যেমন ফিতনার মোহজাল থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে পাবে, কিংবা ফিতনায় আবদ্ধ হওয়া থেকে বেঁচে থাকবে; অন্য দিকে পাবে নিজের হতাশাগ্রস্ত মনকে উজ্জীবিত করার পাথেয়। পাবে হতাশার মোহ ভেঙে জীবনযুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াবার গতিপথ! আজ এ পর্যন্ত। আল্লাহ তায়ালা দ্বীনের খেদমতে সকলের প্রচেষ্টা কবুল করুন, এই দুআ আর প্রত্যাশা রাখছি। আহবাব প্রকাশন এবং প্রকাশনা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি দুআ ও ভালোবাসা রইল। ভুল হয়ে গেলে শুধরে দেওয়ার আর্জি রেখে শেষ করছি…!