৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখার সরসতায় পৃথিবীর সকল প্রান্তের বাংলা পড়তে পারা পাঠক রীতিমতো বুঁদ হয়ে আছেন। তাঁর লেখনী যেমন রস-রঙ্গে টইটম্বুর, তেমনি ব্যক্তিজীবনেও মানুষটি ছিলেন ব্যতিক্রমী ধরনের রসিক। নিত্যকার কথাবার্তায়, দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে তাঁর রসবোধের ছোঁয়া সর্বক্ষণ পাওয়া যেত। তিনি ঘন্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিতে ভালোবাসতেন, সেসব আড্ডায় এক অপরিহার্য উপাদান হিসেবে থাকত তাঁর মুখনিঃসৃত নানা মজার কথা এবং স্মৃতি কি অভিজ্ঞতার বিপুল ভাড়ার থেকে হেঁকে আনা হাস্যরসাত্মক ঘটনা। মুজতবা রঙ্গ বইয়ে সৈয়দ মুজতবা আলীর জীবনের সে রকমই কিছু সত্যি মজার ঘটনা গল্পের ঢঙে তুলে আনা হয়েছে। স্বল্প পরিসরে হালকা চালে বর্ণনা করা মুজতবা আলীর এসব সত্যিকার 'রঙ্গ' বা নকশা পড়ে পাঠক মজায় মজবেন, আবার তাঁর সাহিত্যিক ও ব্যক্তিজীবনের নানা অচেনা-অজানা দিকেরও সন্ধান পাবেন। সাহিত্যরসিক বোদ্ধা পাঠকের কাছে উপরি পাওনা হিসেবে গণ্য হবে মানুষ মুজতবা আলীর অনন্যসাধারণ এক অম্লমধুর রূপ—যা খানিকটা অভাবিতপূর্ব চমকে পরিপূর্ণ। এতে হয়তো সর্বত্র অট্টহাসি নেই, তবে ঠোঁটের কোনায় গূঢ় মুচকি হাসি তো ফুটবেই।