অনুভূতির অনুরণন। হৃদয়ের গভীরে লুকিয়ে থাকা ধ্বনি। ধ্বনি হলো স্বর। মানে ‘অনুভূতির অনুরণন’ উপন্যাসটি মানুষের জীবনে খুব গোপনে সযতনে লুকিয়ে রাখা অনুভূতি আর উপলদ্ধির গল্প। গল্পটা এক মানুষের অনুভূতিতে সীমাবদ্ধ রাখেন নি লেখক। গল্প শুরু ছোট্ট শিশু পারিকাকে নিয়ে। তারপর আসে ঝুনু, পারিকার বড় বোন। আসেন মাজেদা খালা- রক্তিয় নন তিনি, আত্মার সম্পর্কের মানুষ। কিন্তু আত্মীয়ের চেয়েও আপন বড়। মায়ের মতন। আসে পরিবারের অন্যেরাও। আসে রায়হান, আসে রায়হানের আদর-স্নেহ মাখা ছোটভাই ইরফান। বড় নরম নরম এই ছেলেমেয়েগুলো। সময়ের পরিক্রমায় এই ছেলেমেয়েগুলো আস্তে আস্তে বড় হয়ে ওঠে। তাদের অনুভূতিগুলোও প্রখর হয়ে হয়ে ডালপালা মেলতে থাকে। ছোট্ট রায়হান বড় হয়ে চলে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে খুঁজে পায় ভিন্ন সংস্কৃতিতে বেড়ে ওঠা অগ্নিজিতাকে। অগ্নিজিতা মেয়েটাকে রায়হানের কাছে আগুনের মতোই লাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে ইরফানও চলে যায় একদিন। সেখানে সবকিছুতেই বিস্ময় দেখে সে। তার সবচেয়ে বড় বিস্ময় অগ্নিজিতা। অকপটে সেকথা জানিয়েও দেয় সে। এই গল্পটি অনায়াসেই রায়হানের হতে পারত। হতে পারত ঝুনুর গল্পও। কিংবা গল্পটা যদি পারিকা মেয়েটার হতো- তাতেও কোনো ক্ষতি হতো না। এমনকি গল্পটাকে হরণ করবার সকল অধিকার আগুন-মেয়ে অগ্নিজিতারও ছিল। কিন্তু এরা সকলে গল্পের প্রধান মানুষ হয়েও গল্পটা তাদের নয়। গল্পটা ইরফানের। পাঠকের অনুভ‚তির অনুরণনের সবটা দখল করে গল্পে খুব করে জাঁকিয়ে বসে আছে ভীষণ মায়াকাড়া সকলের আদর আর ভালোবাসা মোড়া ইরফান।
নার্গিস বানু জুহী রসায়ন বিষয়ে অনার্স মাস্টার্স করেছেন। পেশাগত জীবনে তিনি একজন শিক্ষক। বর্তমানে তিনি বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে রসায়ন বিভাগে শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। পড়াতে তাঁর ভালো লাগে। রসায়নের মতো রসহীন বিষয়ের মানুষ হয়েও ভালোবাসেন সাহিত্য। লেখালেখিও করেন। গদ্য, পদ্য দু মাধ্যমেই তাঁর প্রাণবন্ত পদচারণ। আকাশ, গাছ, নদী, পানি, রোদ তাঁর পছন্দের বিষয়।