মা-হাঁসটা দীর্ঘসময় তা দিয়ে তার এই ধৈর্যের পুরস্কার পেল। ডিমগুলো ফেটে খুলতে শুরু করেছে। একটার পর একটা পিপ, পিপ, পিপ। কোঁয়াক, কোঁয়াক ডেকে উঠল মা-হাঁসটা। সে নিজের ওপর আর এই সুন্দর পৃথিবীর ওপর খুশি আর সন্তুষ্ট হলো। এরপরেই একটা অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ করল, একটা বেশ বড়ো ডিমÑঅন্যসব ডিমগুলো থেকে বড়ো, এখনও আগের মতোই রয়ে গেছে। ভাঙেনি। ডিমটা সত্যিই বেশ বড়ো আর সুন্দর। অবশেষে বড়ো ডিমটা ভাঙল। পিপ! পিপ! একটা ছোট্ট বাচ্চা সেই ভাঙা ডিমের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে মাতালের মতো গড়িয়ে পড়ল। বাচ্চাটা একটু বড়ো আর কুচ্ছিৎ। আর রংটাও ছাইয়ের মতো। ছানাটা অন্যগুলোর মতো না। ছোট্ট সোনার বলের মতো নয়। এখানকার অন্য হাঁসের ছানাদের মতো নয়। কুচ্ছিৎ হাঁসের ছানাটি উড়ে এসে জলে নামল। তারপর দ্রুততার সঙ্গে সাঁতরে এগিয়ে গেল ওই তিনটি সুন্দর হাঁসের দিকে। হাঁস তিনটি তাকে দেখেই পাখা ঝাপটে বেশ দ্রæত তার দিকে এগিয়ে এলো, তাকে দেখতে। এসব দেখে আর লজ্জায় সে তার মুখটা পালকের ভেতর গুঁজে ফেলল। তারপর সে ভাবল সে কত অবজ্ঞা আর যন্ত্রণার শিকার হয়েছিল। এখন সে কেন ভিন্ন রকম ভাবছে না। সবাই তাকে বলছিল, সেরা আর ভালোবাসার পাখি। সে এখন খুব সুখী তবে গর্বিত নয়। সে ছিল কুচ্ছিৎ হাঁসের ছানা। সে এখন জেনেছে অহংকার করাটাই হলো সবচেয়ে বোকামি। সে এজন্য খুশি যে, সে অনেক কষ্ট সহ্য করেছে, পরিশ্রম করেছে। এতে সে জ্ঞান লাভ করেছে আর সহ্য করতে শিখেছে আর এসবই তাকে অন্য সবার চেয়ে বেশি সুখী করেছে।