কণ্ঠে তাঁর মায়াবী দরদ। কী সাবলীল সিলেটি উচ্চারণ। নিজেই লেখেন, নিজেই সুর করেন, নিজেই কণ্ঠ দেন। এখন তো অনেকের মুখে মুখে ফেরে তাঁর গান। পালাগানেরও তিনি সুপরিচিত শিল্পী। তিনি আয়াজ বাঙ্গালী, মৌলভীবাজারের বড়লেখার আয়াজ বাঙ্গালী । বড়লেখার বাসিন্দা হলেও তাঁর গান এখন বৃহত্তর সিলেটসহ দেশের নানা অঞ্চলের শিল্পীরা কণ্ঠে তুলে নিয়েছেন। বিশেষত তাঁর রচিত আঞ্চলিক গান তো সিলেট অঞ্চলে রীতিমতো অভাবনীয় সাড়া ফেলেছে। ফেসবুক-ইউটিউবের বদৌলতে তাঁর গান আলাদা এক জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। এমনকি সিলেটের আঞ্চলিক গানের গীতিকার ও শিল্পী হিসেবে আয়াজ বাঙ্গালীও অর্জন করে নিয়েছেন ব্যাপক তারকাখ্যাতি। আয়াজ বাঙ্গালী তাঁর গানে সিলেট অঞ্চলে ব্যবহৃত শব্দ এতই দক্ষতার সঙ্গে সংযুক্ত করেছেন, যা পাঠে/শ্রবণে এক ধরনের তৃপ্তি ভর করে । শুধু যে আঞ্চলিক গান রচনাতেই তিনি সিদ্ধহস্ত, তা নয়। প্রেমতত্ত্ব, বিচ্ছেদসহ নানা পর্যায়ের গানও তিনি রচনা করেছেন। অত্যন্ত পরিশীলিতভাবে তিনি তাঁর গানে শব্দের পর শব্দ বুনন করেছেন—যা তাঁকে বিশিষ্টতা দিয়েছে। ভালো লাগছে এটা ভেবে—আয়াজ বাঙ্গালীর মতো গুরুত্বপূর্ণ একজন গীতিকারের গানের সংকলন প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হচ্ছে। আর এটি সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করছেন আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন লেখক ও শিক্ষক মৃণাল কান্তি দাস। সংকলনের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘আয়াজ বাঙ্গালীর গান : চৌদ্দ নম্বর বেয়াক্কল'। বাংলার লোকায়ত সংস্কৃতির বিকাশে মৃণাল কান্তি দাসের এমন উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। আয়াজ বাঙ্গালীর গানের ভুবনে সবাইকে স্বাগত। —- সুমনকুমার দাশ লোকসংস্কৃতি গবেষক ও প্রাবন্ধিক; ব্যুরো চিফ, প্রথম আলো, সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক কার্যালয়।