মাঝে মাঝে মনে হয় এই শহরটার নিচে আরেকটা শহর আছে । তার নিচে আরেকটা, তারপর আরো আরো শহর । শহরগুলো পরিত্যক্ত নয়। সেখানে সাজানো আছে বহু গল্প, কত দিবারাত্রির সুঘ্রাণ । আমি হয়তো একটা ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যাবার সময় এই শহরগুলোকে ফেলে যাচ্ছি । কিন্তু সব গল্প মনের মধ্যে থেকে যাচ্ছে রূপকথা হয়ে । ঢাকা আমার জন্মের শহর । শহরবাসের কত স্মৃতি জমে আছে মনের মধ্যে! আবার উল্টো করে বললে, আমার কতকিছু জমা থাকলো এই শহরের কাছে । একটি শহরের বিকাশের ধারা বিচিত্র । কত পথে, কত হাত ধরে একটু একটু করে পাল্টে যায় শহর । শহরের মানুষের জীবনধারা পাল্টায়, পাল্টায় রুচী, বদলে যায় সংস্কৃতি । পেছনে পড়ে থাকে স্মৃতি । এই বই সেই স্মৃতির রেখা । ভুলে যাওয়া ঘটনা, মুছে যাওয়া মানুষ, হারিয়ে যাওয়া অভ্যাস, শুধু স্মৃতির সঙ্গী হয়ে থাকা খাবারের দোকান, পানশালা, কাঠের জানালা, চোর, খিস্তি, প্রেম, বৃষ্টি, আড্ডা— সব মিলেমিশে মনের মধ্যে রয়ে যায় অন্য এক শহরের ছবি । এই বইয়ের লেখাগুলো কয়েক বছর আগে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিলো প্রাণের বাংলা নামে একটি অনলাইন ম্যাগাজিনে । জার্নিম্যান বুক্স প্রকাশনার কর্ণধার কবি তারিক সুজাত সেগুলো মলাটবন্দি করে কৃতজ্ঞ করলেন আমাকে ।
জন্ম মার্চ ২৫, ১৯৬৪। লেখালেখির শুরু আশির দশকের শুরুতে। লেখাপড়া শেষ করেছেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন প্রায় তিরিশ বছর । এখন লেখালেখির সঙ্গেই জড়িত। প্রকাশিত গ্রন্থ : ফেলে আসা রুমাল (কাব্যগ্রন্থ), এইসব অন্ধকার (উপন্যাস), পুড়তে থাকো বিজ্ঞাপনের আগুনে (কাব্যগ্রন্থ), যেখান থেকে আকাশ দেখা যায় না। উপন্যাস). কয়েকটি মৃত জোনাকী (গল্পগ্রন্থ), বৃত্তের ভেতরে একা। (উপন্যাস), শীতে ভবঘুরে (কাব্যগ্রন্থ), অভ্যুত্থান (উপন্যাস), চৈত্রের দিন (উপন্যাস), মহাকালের ঘােড়া (উপন্যাস), চে গুয়েভেরার আফ্রিকার ডায়েরি (অনুবাদ)।