ফ্ল্যাপে লিখা কিছু কথা শুধু স্প্যানিস সাহিত্যেই নয়,গোটা বিশ্ব সাহিত্যের প্রেক্ষিতেই তিনি এক অসাধারণ ছোট গল্পকার। গত শতাব্দীর সাহিত্যের প্রধান লক্ষণ যদি কাফকার দিকে ঝুঁকে পড়ার মধ্যে কেউ খুঁজে পেয়ে থাকেন তাহলে কাফকা-পরবর্তী সাহিত্যর প্রধান লক্ষণ হচ্ছে তা কোনো না কোনো ভাবে বোর্হেসের প্রতি ঝুঁকে যায়। তাঁর মত লেখেন না এমন সব লেখকদের কেউ কেউ তাঁর যাদুকরী সাহিত্যিক সংক্রাম থেকে মুক্ত নন। এমনকি তাঁর লেখার বিষয় বস্তুর সমালোচনাকরী লেখকও (পোলিশ লেখক স্তানিসোয়াভ লেম এর কথা মনে পড়বে আমাদের) তাঁর গল্প গুলো শিল্পকৌশলের যাদু ও তীব্র চৌম্বক শক্তিকে এড়িয়ে নতুন কিছু ভাবতে পারেন না। এই কারণে ফরাসি, ইতালি, ইংরেজী ও অন্যান্য ইয়োরোপীয় সাহিত্যে তাঁর এতো অনুসারী । স্প্যানিস সাহিত্য দোন কিহোতের লেখক সের্বান্তেরসের পর বোধ হয় আর কেউই বোর্হেসের মতো বিপুল মৌলিকতা নিয়ে হাজির হননি। সাম্প্রতিক স্প্যানিস সাহিত্যের সমস্ত তারকা লেখকরাই বোর্হেস দ্বারা প্রভাবিত। মূলত তার মাধ্যমেই আধুনিক স্প্যানিস সাহিত্য সত্যিকার অর্থে আন্তর্জাতিক হয়ে উঠে। বোর্হেস প্রধান প্রধান সব গল্পগ্রন্থ থেকে সেরা গল্পগুলো বাছাই এবং সংকলনের মাধ্যমে ‘নির্বাচিত গল্পটি’ বাংলা ভাষার পাঠকদের জন্য হয়ে উঠেছে এক শ্বাশত মৌচাক , অফুরান আনন্দ ও বিস্ময়ের এক চিরজীবী উৎস। যে চিরন্তনকে তিনি ছুঁয়ে ছিলেন ,যে অমরতাকে তিনি স্পর্শ করেছিলেন, যে সুফী মরমীবাদকে তিনি গভীর ভাবে উপলব্ধি করেছিলেন ,বাংলার গোলাপ ও বাঘের যে স্বর্ণকে তিনি সারা জীবন রক্ষা করেছন, বাংলাভাষী পাঠকরা তার অংশীদার হয়ে উঠবেন এই প্রথম বারের মতো । বোর্হেসের সঙ্গী হওয়া মানেই পৃথিবীর সমস্ত কাল ও সময়ের সবগুলো শাখায় পরিভ্রমণ করার বিরল অভিজ্ঞতার অর্জন।
হোর্হে লুইস বোর্হেস (আগস্ট ২৪, ১৮৯৯ – জুন ১৪, ১৯৮৬) ছিলেন একজন প্রথিতযশা আর্জেন্টিনীয় সাহিত্যিক। ... যদিও তিনি তার ছোটগল্পের জন্যই বেশি বিখ্যাত, বোর্হেস একাধারে কবিতা, প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও সাহিত্য সমালোচনা লিখে গেছেন। তিনি সফল অনুবাদকও ছিলেন। জীবনের অনেকখানি সময় তিনি অন্ধ অবস্থায় অতিবাহিত করেন।