আমাদের জীবনযাপন কোনো না কোনো গল্পের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সেসব গল্প নিছক কোনো গল্প না ভেবেই আমরা আরেকটি গল্পের ভেতরে প্রবেশ করি। এমন শত গল্পের সমন্বয়েই মানবজীবন। আমি ছোটগল্পে মানুষের জীবনবোধকে তুলে ধরার চেষ্টা করি যা বিগত সময়ে প্রকাশিত আমার তিনটি ছোটগল্পের (শহরের অসম প্রেম, দেখা শহরের অদেখা গল্প, এই শহরের দিনরাত্রি) বইয়েও পাঠক পেয়েছে। বাস্তবতার নিরিখে লেখা গল্পগুলো পড়ে পাঠক আমাকে প্রায়ই জিগ্যেস করে বসেন, গল্পগুলো বাস্তব ঘটনা নিয়ে লেখা কিনা, গল্পের চরিত্রটি আমিই কিনা, গল্পের ঘটিত বিষয়টি আমার সাথে ঘটেছে কিনা ইত্যাদি। আমি উত্তর করি- না, এগুলো মোটেও বাস্তব না, কোনো চরিত্রেই আমি থাকি না। আসলে আমি গল্পগুলো সমসাময়িক প্রেক্ষিতে সেভাবেই সাজাই যাতে পাঠক অনুধাবন করতে পারেন যে এমনও গল্প আমাদের মাঝেই তৈরি হচ্ছে। যখন মানুষের জীবনবোধ ও ঘটনাপ্রবাহের সাথে আমার গল্পগুলো মিলে যায়, তখন আমার ভালোলাগা কাজ করে এটা ভেবে যে আমি অন্তত কিছু মানুষের মনের ভেতর প্রবেশ করতে পেরেছি। উপলব্ধি করতে পেরেছি- মানুষের সুখ-দুঃখ ও ভালোবাসাকে। ‘মেঘে ঢাকা চাঁদ’ আমার চতুর্থ ছোটগল্পের বই। নামভূমিকার একটি গল্পও আছে বইয়ে। সর্বমোট পনেরোটি গল্প স্থান পেয়েছে গ্রন্থটিতে। গল্পগুলো বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছাপাও হয়েছে। একদিন বই প্রকাশের মনোভাব ব্যক্ত করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতেই প্রকাশক সোহাগ হোসেন সাজিদ বইটি প্রকাশের আগ্রহ জানান। নিয়ম মেনে চুক্তি সম্পাদিত হয়। এতে আমার বই প্রকাশের আগ্রহ যেমন বেড়ে যায়, তেমনই দায়িত্বও বেড়ে যায় এটা ভেবে যে পাঠককে ভালো কিছু উপহার দিতে হবে। বর্তমানে প্রকাশনাখাতে চরম অস্থিরতা চলছে। কাগজসহ প্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম আকাশচুম্বি। এরপরও প্রকাশক সাহস করে আমার বইটি প্রকাশ করলেন, এজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেই সাথে কবি শফিক রিয়ানকেও ভালোবাসা জানাচ্ছি, বইটি প্রকাশের পেছনে তারও সীমাহীন ভালোবাসা ও আন্তরিকতা রয়েছে। প্রিয় পাঠকসহ সকলের সুস্থতা কামনা করছি।
মোহাম্মদ অংকন, বর্তমান লেখকদের মধ্যে পরিচিত মুখ। শৈশব-কৈশোরে লেখালেখির হাতেখড়ি। নিয়মিত লিখছেন দেশ-বিদেশের পত্রপত্রিকা, ম্যাগাজিন ও সাময়িকীতে। সাহিত্যের সব শাখাতেই আছে সমান দক্ষতা। দক্ষতা, আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাব ও প্রতিশ্রুতিশীলতা ক্রমশ এই লেখককে আগামীর পথ দেখাচ্ছে। বছরব্যাপী নতুন বই প্রকাশের মাধ্যমে পাঠকমহলে চমক সৃষ্টি করে চলেছেন। বাংলা সাহিত্যে এই প্রতিভাবান লেখকের অবাধ বিচরণে মুগ্ধ সবাই। তিনি ১৯৯৭ সালের ৭ নভেম্বর নাটোরের চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র হওয়ার পরও লেখালেখির সূত্রে ঝুঁকে পড়েন সাংবাদিকতায়। দৈনিক মানবকণ্ঠে সাব-এডিটর হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও সরকারি চাকরি পাওয়ায় তা আর করা সম্ভব হয় না। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের সর্ববৃহৎ ইউনিট ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র কম্পিউটার বিভাগে কর্মরত আছেন। পুরস্কার ও সম্মাননা: ‘পাপড়ি-করামত আলী পাণ্ডুলিপি পুরস্কার-২০১৯’, ‘রূপচাঁদা: অদেখা বাংলাদেশ সেরা গল্পকার-২০১৯’, ‘চয়েন বার্তা সম্মাননা-২০২০’, ‘লিখিয়ে পাণ্ডুলিপি পুরস্কার-২০২০’, ‘প্রিয় বাংলা পাণ্ডুলিপি পুরস্কার-২০২২’।