ফ্ল্যাস ফিকশন সম্প্রতি বিশ্বসাহিত্যে একটি জনপ্রিয় শাখা। কোথাও কোথাও ফ্ল্যাস ফিকশন ডে পালিত হয়ে আসছে। ফ্ল্যাস ফিকশন লেখে ‘ম্যান অব বুকার’ পুরস্কার পেয়েছেন মার্কিন লেখক লিডিয়া ডেবিস। ডেবিসের গল্পের দৈর্ঘ্য এক লাইন থেকে শুরু করে তিন পৃষ্ঠা পর্যন্ত বিস্তৃত। ফ্ল্যাস ফিকশন লেখে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছেন মার্কিন কথাসাহিত্যিকদের কেউ কেউ। এ ধারায় লিখেছেন কাফকা, হেমিংওয়ে, বোর্হেস, আর্থার সি ক্লার্ক, রে ব্রাডবুর, নগিব মাহফুজ, ডোনাল্ড বার্থলেম, কেট সপা, শেখব প্রমুখ। অনেকে এটি লিখেছেন ফ্ল্যাস ফিকশনের একাডেমিক সংজ্ঞা বিবেচনা না করেই। এটি এখন সাহিত্যের একটি স্বতন্ত্র ধারা বা ঘরানা হিসাবে বিবেচিত। ৬ থেকে ১,০০০ শব্দ-পরিসরে সাধারণত ফ্ল্যাশ ফিকশন তথা আকস্মিক বা বিস্ফোরক কল্পকাহিনী এবং অতি ছোট ছোট গল্প লেখা হয়। ২,০০০ পর্যন্ত শব্দের গল্পও এ ধারায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। আধুনিক বাংলাসাহিত্যে ফ্ল্যাস ফিকশনের প্রধান লেখক বনফুল(১৮৯৯-১৯৭৯)। সম্প্রতি উত্তরাধুনিক চিন্তা-ভাবনা মাথায় রেখেই চমৎকার ফ্ল্যাস ফিকশন লিখছেন দুই বাংলার অনেক নবীন-প্রবীণ কথাশিল্পী। এ ক্ষেত্রে কথাসাহিত্যিক আবু সাইদ কামাল বিশিষ্টতার স্বাক্ষর রাখছেন।
কবি ও কথাসাহিত্যিক আবু সাইদ কামাল। (জন্ম ৫ জানুয়ারি ১৯৫৯ সালে ময়মনসিংহ জেলায়) লিখছেন প্রায় তিন যুগ ধরে। সত্তর দশকে কবিতা দিয়ে শুরু করলেও লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ নব্বইয়ের দশকে ।। নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা, শিশুতােষ গল্প ও ছড়া। এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ১৮টি। সম্পাদনা করছেন ‘পাদদেশ’ছােটদের সাহিত্য ও ‘ছড়াপাতা' নামে তিনটি ছােট কাগজ। এ কথা সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, একজন নিষ্ঠাবান এবং নিরলস সাহিত্যকর্মী ও সাহিত্য সেবী হিসেবে ইতােমধ্যে তিনি নিজস্ব স্থান করে নিয়েছেন। লেখকের বিশেষ পরিচিতি কথাসাহিত্যিক ও ছড়াকার হিসেবে। গত দুই যুগে উল্লেখযােগ্য সংখ্যক শিল্পোত্তীর্ণ ছোটগল্প লিখেছেন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ছােট কাগজে। বিশেষ করে গারাে পাহাড়ের পাদদেশ এলাকার সংখ্যালঘু। নৃগােষ্ঠী নিয়ে তার ছােটগল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ সুধীমহলে প্রশংসিত হয়েছে। এ ছাড়াও ইতােমধ্যে মাতৃকুলভিত্তিক গারাে সমাজ’ ও হাজংদের অতীত বর্তমান নামে প্রকাশিত তাঁর গবেষণাধর্মী দুটি প্রবন্ধগ্রন্থ বেশ তথ্যসমৃদ্ধ। বাঁহাতি তানিয়া' নামের উপন্যাসটি ২০১৬ সালে দৈনিক যায় যায় দিন ঈদসংখ্যায় প্রকাশিত হয়।