সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী গত শতাব্দীর সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিম স্কলারদের মধ্যে একজন।শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলবী,ইমাম ইবনে তাইমিয়া ও ডক্টর মুহাম্মদ ইকবালের চিন্তাধারা দ্বারা তিনি প্রভাবিত ছিলেন । রাজনীতিতে আসার আগে মওলানা মওদুদী দীর্ঘদিন সাংবাদিকতাও করেছেন। মূলত গত শতাব্দির ত্রিশ এর দশকে হায়দারাবাদ থেকে প্রকাশিত ‘তরজুমান-আল কোরআন’ পত্রিকা সম্পাদনার মাধ্যমে তিনি তার ইসলামী চিন্তা ও দর্শন প্রচার করতে থাকেন। সে পত্রিকাই আসলে তার দল গঠনের ভিত্তি রচনা করে দিয়েছিলো। পত্রিকাটা পাঠকপ্রিয় ছিল। ইসলামের তাত্ত্বিক বিষয়ে আলোচনাই মুখ্যত ওই পত্রিকার উপজীব্য বিষয় ছিল। আজকের দিনে মুসলিম দুনিয়া জুড়ে যে ইসলামী পুনর্জাগরণের ঢেউ লেগেছে কোন সন্দেহ নেই মওলানা মওদুদী তার অন্যতম প্রাণপুরুষ । তাঁর চিন্তা ও বিশ্বাস বিশ্বজুড়ে মুসলিম পুনর্জাগরণবাদীদের একটি বিরাট অংশের মতাদর্শিক ভিত্তি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে এবং সেই মতাদর্শকে কার্যকরী করার জন্য নানামুখী চেষ্টাও চলছে । এসব আন্দোলনগুলোর একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি ইসলামকে ভিত্তি করে সমাজ পরিবর্তনের পক্ষপাতী এবং একই সাথে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী । লক্ষণীয় মুসলিম দুনিয়ায় আজ যে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী লড়াই শুরু হয়েছে সেখানে ইসলাম পন্হীরাই প্রধান ভূমিকা নিচ্ছে । বলার অপেক্ষা রাখেনা ইসলামের এই বৈপ্লবিক ভূমিকার পিছনে মওলানা মওদুদী ও হাসানুল বান্নার চিন্তা ও দর্শনের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি । এদের বৌদ্ধিক-নৈতিক প্রচেষ্টায় মুসলিম ভাবজগতে সাম্রাজ্যবাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ,সাংস্কৃতিক নীতি ও দর্শনের ব্যাপারে ব্যাপক রূপান্তর ও পুনঃমূল্যায়নের প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে । তারা বুঝতে পেরেছে সাম্রাজ্যবাদী কোন ব্যবস্হাদি দিয়েই তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না । মুসলিম ভাবজগতের এই আলোড়ন একালের মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বিপ্লবী ঘটনা এবং এই প্রক্রিয়া আজ তাদেরকে দ্রুত মুক্তির লক্ষ্যে টেনে নিয়ে যাচ্ছে ।
তিনি ১৯৩২ সালে ভারতের ভূপালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর তাঁর পরিবার লাহোরে চলে আসেন এবং সেখানে বসবাস শুরু করেন। একজন পাকিস্তানী ইসলামী চিন্তাবিদ ও লেখক। খুররম জাহ মুরাদ এশিয়ার একজন বিখ্যাত প্রকৌশলী। একই সাথে তিনি ছিলেন দা’য়ী, সংগঠক, ছাত্রনেতা, হাদীস বিশারদ, ইসলামিক চিন্তাবিদ এবং সেরা প্রকৌশলী। খুররম জাহ মুরাদ করাচির NED University of Engineering and Technology থেকে পুরকৌশল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি একই বিভাগে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন University of Minnesota থেকে। ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পাকিস্তানের বহু উন্নয়ন কাজ ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার সাথে যুক্ত ছিলেন। আইয়ুব খানের আমলে ১৯৬৫ সালে মাতুয়াইল, মুসলিম নগর, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, কদমতলী, ডেমরা, নারায়ণগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা থানাসহ ৫৭ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বন্যামুক্ত এলাকা গড়তে প্রতিষ্ঠা করা হয় ডিএনডি বাঁধ। এই প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন খুররম জাহ মুরাদ। ১৯৭৫ সালে সৌদি বাদশাহ পবিত্র কাবা ঘরের এক্সটেনশন কাজ শুরু করেন। এই কাজের প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন খুররম জাহ মুরাদ। তিনি এর জন্য কোন পারিশ্রমিক গ্রহন করেন নি। এই বদান্যতার পুরস্কার হিসেবে মসজিদুল হারামের আটটি দরজার মধ্যে একটি দরজা ইঞ্জিনিয়ার মুরাদের নামে নামকরন করা হয়েছে। দরজাটির নাম 'বাবে মুরাদ'। ১৯৯৬ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।