কখনো কখনো দূর্বলতাই শক্তি। কেউ গান গাইতে পারে, সে তখন ছবি আঁকার মধ্যে গান যোগ করে দেবে। কেউ ছবি আঁকতে পারে, সে তখন কবিতার মধ্যে ছবি এঁকে দেবে। এইটুকু যোগে তৃতীয় মাত্রার দিকে যাই আমরা, এইটুকু সংযোগে আমরা পেয়ে যাই ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের স্বাদ। বাংলা ভাষার, অপিচ, বাংলা কবিতার সবচেয়ে বড় দূর্বলতা হয়তোবা ‘আমি, তুমি’ সমাচার। কবিতার মধ্যে বড় বেশি আমি আর তুমি ঘাপটি মেরে থাকে। এই ঘাপটি মেরে থাকাটা ততক্ষণই দূর্বলতা যতক্ষণ না নয়া মাত্রা না—পায়, নয়া দৃষ্টি খুলে না—দেয়। সাকিরা পারভীনের ‘তুমিও ঠিক তোমার নও’ কাব্যগ্রন্থ এই ‘আমি, তুমি’র নয়াদৃষ্টি, নয়ামাত্র যোগ করে। যে মাত্রায় তুমি তুমি থাকে না, আমি আমি থাকি না। এই থাকা—না—থাকার খেলাটি দারুণ, মনোমুগ্ধকর। বেদনাতুর হলেও কথা তো সত্য আমাদের ‘তুমি’ হারিয়ে যায়, আমাদের ‘আমি’ হারিয়ে যায়। ‘তুমি ঠিক তোমার নও’ কাব্যগ্রন্থের শরীরে এই হারিয়ে যাওয়া বেদনাটি প্রকট তোমার নাই হয়ে যাওয়া সয়ে নেই নিশ্চিত জানি রবীন্দ্রনাথের গান গেয়ে উঠবেন শাহানা বাজপেয়ী তোমার খোলা হাওয়ায় অথচ কি জানো প্রতিটি পূর্ণিমাই আলাদা আলাদা উদযাপনের সমস্ত আয়োজন করা থাকে কেবল কোন ফাঁকে তুমি চুরি হয়ে যাও।
জন্ম তার সাতক্ষীরার শ্যামনগরে। শ্যামনগরে যার জন্ম তাকে তাে অঙ্গে-ভঙ্গে রাধাই হতে হয়। শ্যামনগরের রাধার পােশাকি নাম সাকিরা পারভীন সুমা। শেখ মাসুম আলী আর মাসুদা বেগমের দ্বিতীয় কন্যা সাকিরা বসবাস করেন ঢাকার বাসাবােতে আর কবিতার কল্পলােকে। মননে-বলনে কবি হলেও তার জীবন গাথা আছে কথাকার মুম রহমানের সাথে। হুটহাট ডান-বাম চলে যাওয়া, যখন যেদিক তার নেশা আর নেশাক্রান্ত সময় পার হয় বন্ধু সাবেরা কিংবা শুসমিনকে পেলে । তিন তরুণী তখন গানেকবিতায় আর ইয়ার্কিতে মত্ত করেন সারা পাড়া। ঐদিকে ঘড়ির সময় ধরে ঠিকই চলে যান শিষ্য ও শিশুদের কাছে।