ঠাকুরমার ঝুলির ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমী, ভ‚ত-প্রেত ও ফুলপাখি আকাশের গল্পে বিভোর হয়ে থাকে শিশুকাল। এখন অবশ্য হাওয়া পাল্টেছে। শিশুরা বইয়ের চেয়ে মোবাইলেই বেশি ব্যস্ত থাকছে। এটা একটা মারাত্মক ব্যাধি। শিশুকাল পেরুলেই কৈশোর আসে। তখন তার স্বপ্নের জগত আরো বিস্তৃত হয়। এখনও কালজয়ী ¯্রষ্টা হিশেবে রবীন্দ্রনাথকেই আমি ভাবি। ছোটদের মন ও চিন্তার উপযোগী ভাব ও বিষয়কে ধারণ করে ছোটগল্প লেখা দুরূহ বৈকি। একজন লেখককে তখন কৈশোরিক ভাব ও কল্পনার সমান্তরালে নিজেকে দাঁড় করাতে হয়। কারণ কিশোরেরও দুঃখ আছে, কষ্ট আছে; অপবাদ, ঘৃণা ও প্রতিবাদ আছে। শিশুসারল্য পেরিয়ে তখন সে প্রবেশ করে চরম বাস্তবজগতে। তখনি তার ভেতর শুরু হয় বোধের সংঘর্ষ। বাস্তবতার নিরিখে তখন তাকে পরিবর্তিত হতে হয়, জীবনযুদ্ধে সৈনিকের মতো। যারা সাহসী হয় তারাই জীবনে অনেককিছু করতে পারে। বাংলাদেশের কিশোরগল্পে কিশোরদের দুঃখ, বেদনা, হতাশা, ঘৃণা, প্রতিবাদসহ জীবনের নানাবিধ গতিপ্রকৃতি সেভাবে উঠে আসেনি। বরং গল্পের আদলে কিছু রহস্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যার কারণে কিশোররা বাস্তবতা থেকে মানসিকভাবে অনেক দূরে নির্বাসিত হয়েছে। বিজ্ঞানমনস্ক একজন কিশোরকে যেমন নতুন কিছু আবিষ্কারে উদ্বুদ্ধ করে, একটা ভালো গল্প-উপন্যাসও তার চিন্তার পরিধি অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। গল্পগুলো বিভিন্ন সময় সংবাদ, দৈনিক বাংলা, কিশোর বাংলা, পূর্বকোণসহ দেশের বিভিন্ন কাগজে শিশুদের পাতায় প্রকাশিত হয়। সেসব গল্প কুড়িয়ে নিয়ে আমার এই গল্পযাত্রা।