দীর্ঘ ৭/৮ বছর ছায়া সুনিবিঢ়, প্রকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের মত একটি ক্যাম্পাসে বাস করার সুযোগ সবাই ইচ্ছা করলেই পায় না। ক্যাম্পাসটা ছেড়ে চলে আসার পর নিজের সেকেন্ড হোম ছেড়ে চলে আসার মত একটা অনুভূতি জাগে। ৭২০ একরের বিশাল এলাকা নিয়ে গঠিত মনোহরা এই ক্যাম্পাসে তখন লোক সংখ্যা ছিল সাকুল্যে ৩ থেকে ৪ হাজার। তবে বলতে হয় কম লোক সংখ্যার ওই ক্যাম্পাসই বেশী কাঙ্খিত ছিল। এই ক্যাম্পাসেই আছে বাংলাদেশের সেরা মুক্তমঞ্চ, আছে অতিথি পাখীর কলতানে পরিপূর্ণ লেক, আছে লাল ইটের ইমারতগুলো। প্রকৃতি ও মানবের মিথস্ক্রিয়ায় ক্যাম্পাসে জন্ম নিয়েছে নানাবিধ ঘটনা-অনুঘটনা, জন্ম নিয়েছে আনন্দ-বেদনার এক মহাকাব্য, জন্ম দিয়েছে চিত্তহরা কিছু অনুক্রম। লেখকের স্মৃতি কথায় এই নানাবিধ ঘটনাই উঠে এসেছে, উঠে এসেছে মা-বাবা নিয়ন্ত্রিত জীবনের বাইরে এসে স্বাধীনতার প্রথম স্বাদ, উঠে এসেছে বন্ধনে আটকানো মানুষদের অকালে চলে যাওয়া, হলে হলে বিচিত্র সব অলিখিত শিক্ষা-অভিজ্ঞতা, শিক্ষকদের মহানুভবতা, নবীনদের আগমনে রোমাঞ্চিত হওয়া, র্যাগ উৎসবের উচ্ছাস, ক্যাম্পাসে আন্দোলনের রূপ, মানিকের সেঞ্চুরী ধর্ষণের বিভ্রান্তিকর প্রচার, প্রেম-ভালবাসা, আড্ডা, অগ্রজ-বন্ধু, অনুজদের সাথে জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময় পার করা, আছে স্মৃতিতে বাস করা অনেকগুলো শুভাকাঙ্খির মানচিত্র অঙ্কন। আর কী আছে আর আছে প্রিয় এই ক্যাম্পাসকে ছেড়ে চলে আসার কষ্ট পাশাপাশি আবার কখন দেখতে যাব তার অপেক্ষা। এটা এমন একটি স্বতন্ত্র ক্যাম্পাস যে ক্যাম্পাস আমাদেরকে লেখাপড়ার পাশাপাশি দিয়েছে দ্বিতীয় বার জন্ম নেয়ার অনুভূতি, পরিশীলিত এক ভাবাদর্শে পরিশুদ্ধ হওয়ার সুযোগ, কালোকে কালো আর সাদাকে সাদা বলার আত্মবিশ্বাস, আচারনণ পরিমিতি বোধের দীক্ষা, দিয়েছে আরো অনেক কিছু যা হয়তো আমরা নিজেরাও জানি না বা বুঝি না।
Title
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: আমার দ্বিতীয় জন্মের আঁতুড়ঘর