বয়োঃসন্ধিকালে মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবে মাসের নির্দিষ্ট সময়ে ঋতু¯্রাব বা মাসিক হয়। এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়াটিকেই সমাজে অনেক ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ বিষয় (ট্যাবু) হিসেবে ভাবা হয়। ফলে এ নিয়ে শুরু হয় রাখঢাক। সচেতনতার অভাবে এ সময়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকেও নজর দেওয়া হয় না। ফলে, জরায়ুমুখ ও প্রজনন অঙ্গে বিভিন্ন ধরণের সংক্রমণ দেখা দেয়। যার দীর্ঘমেয়াদি কুফল একজন নারীকে বয়ে বেড়াতে হয় সারা জীবন। তাই, এ বিষয়ে লজ্জা নয়, কথা বলতে হবে। সচেতন হতে হবে। সচেতন করতে হবে। কারণ, মাসিক একটি মেয়ের স্বাভাবিক জীবনের অংশ। কোন অতিরিক্ত বা অপবিত্রতার বিষয় এটি নয়। এটিকে ভয় বা ঘৃণার চোখে দেখা যাবে না। এটি একটি প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক নিয়ম। জীবন প্রবাহের সব অংশের মতোই স্বাভাবিক। বিষয়টা ক্ষণিকের জন্যও ভোলা যাবে না, ভোলা উচিতও হবে না। বিষয়টিকে মনোবৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে দেখাতে চেয়েছেন লেখক। তিনি দেখাতে চেয়েছেন শারীরিক যে কোন বিষয়কেই মনের ব্যাখ্যায় বিশ্লেষণ করা দরকার এ জন্য যে, সমস্যা সমাধানের জন্য মেডিকেশন শুধুমাত্র নয় মানসিক প্রস্তুতিটাও দরকার প্রবল। তাই মাসের বিশেষ সময়ের প্রস্তুতিটা হতে হবে সাধারণ তবে যতœশীল। সচেতনভাবে পরিচর্যাই হচ্ছে ভাল থাকার মহৌষধ। কাউন্সেলিংই একটি শিশুকে তার বিশেষ সময়ে ঠিক রাখার সাহস যোগাতে পারে, বড় হয়ে উঠলে তাকে ভয় বা বিরক্তি থেকে দূরে রাখতেও সঠিক সমাধানটি পেয়ে যাবে সে কাউন্সেলিংয়ের কারণে। লেখক দেখাতে চেয়েছেন নির্দিষ্ট বয়স সীমায় পৌঁছানোর পর যেকোনো সময় সন্তানের ঋতু¯্রাব শুরু হতে পারে। তাই ঋতু¯্রাব নিয়ে আলোচনার প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি তা সামাল দেওয়ার রসদও যোগান দিতে হবে। ঋতু¯্রাবের সময় ব্যবহৃত উপকরণগুলোর সঙ্গে পরিচয় করানো, ব্যবহার করতে শেখানো, তাদের ভালমন্দ, সে সময়কার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সবকিছু সম্পর্কে দীক্ষা দিতে হবে আগেভাগেই। আর ঘরের বাইরে যাওয়ার সময় তার কাছে কিছু উপকরণ থাকাটাও নিশ্চিত করতে হবে মাসের সেই সময়চক্রটিকে ঘিরে। যদি তাই হয়- তখনই বলা যাবে ‘‘বিশেষ সময়ে ভয়, আর কখনও নয়’’।