আধুনিক বাংলা ছড়ার অধীশ্বর লুৎফর রহমান রিটন। ছন্দের জাদুকর হিশেবে তাঁর জনপ্রিয়তার সীমানা অভ্রভেদী। যে কোনো বিষয়ই ছড়া হয়ে ওঠে তাঁর হাতে। ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন নিরপেক্ষ নন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষে। বাংলা-বাঙালি-বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের পক্ষে। বঙ্গবন্ধুকে বিষয় করে লুৎফর রহমান রিটনের লেখা ৩১টি বিস্ময়কর ছড়া-কবিতার সংকলন 'দাবায়া রাখতে পারবা না'। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন তিনি। যেমন--শেখ মুজিবের ছড়া (১৯৯২), সোনার ছেলে খোকা (২০০১), একটি মুজিবরের থেকে (২০০৯), জয় বাংলার ছড়া জয় মুজিবের ছড়া (২০১৫), শেখ রাসেলকে লেখা চিঠি (২০১৫), বঙ্গবন্ধু সমগ্র (২০১৬) এবং 'ছোটদের বঙ্গবন্ধুর ছড়া' (২০২০)। বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ উদযাপনকালের মাহেন্দ্রক্ষণে ২০২১ সালে লুৎফর রহমান রিটন কর্তৃক রচিত হয়েছে বেশ কিছু অনন্যসাধারণ ছড়া-কবিতা। যেখানে বঙ্গবন্ধুকে তিনি উপস্থাপন করেছেন উপলব্ধির বহুমাত্রিক দৃষ্টি এবং মাত্রায়। রচনাগুলোর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলা-বাঙালি-বঙ্গবন্ধু-বাংলাদেশ--এই চার মূলমন্ত্রে আপসহীন লেখক লুৎফর রহমান রিটনের যাপিত জীবনে তাঁর চিন্তায় চেতনায় মননে ও মেধায় বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতির হিরক-দ্যুতির যে অপরূপ অনুরণন, তারই অননুকরণীয় ছন্দময় প্রকাশ ‘দাবায়া রাখতে পারবা না।
Lutfur Rahman Reton পুরনো ঢাকার ওয়ারী এলাকায় তার শৈশব অতিবাহিত হয়। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে এইচএসসি পরীক্ষা দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে আবুজর গিফারি কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন। তিনি ২০০১ খ্রিস্টাব্দে জাপানে বাংলাদেশের কালচারাল এটাশে নিযুক্ত হয়েছিলেন। সাবেক সম্পাদক হিসেবে ছোটদের কাগজ (অধুনালুপ্ত); জাপানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাবেক ফার্স্ট সেক্রেটারি (২০০০-২০০১) ছিলেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থ: ছড়া: ধুত্তুরি (১৯৮২); ঢাকা আমার ঢাকা (১৯৮৪); উপস্থিত সুধীবৃন্ধ (১৯৮৪); হিজিবিজি (১৯৮৭); তোমার জন্য (১৯৮৯); ছড়া ও ছবিতে মুক্তিযুদ্ধ (১৯৮৯); রাজাকারের ছড়া (১৯৯৯); শেয়ালের পাঠশালা (১৯৯২); রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মারকগ্রন্থ (২০০০); নেপথ্য কাহিনী (২০০১)। সম্মাননা ও স্বীকৃতি সিকান্দার আবু জাফর সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮২, অগ্রণী ব্যাংক শিশু ,সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮২, ১৯৯৬, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পুরস্কার ১৯৮৪, বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার ২০০৭