আরবি ভাষায় প্রণীত মূল বইতে (اَلمحَجَّةْ فِىْ سَيْر الدُّلْجَةِ) লেখক তাঁর উপস্থাপিত বিষয়ের সমর্থনে কুরআনের আয়াত ও হাদীসের সূত্র উল্লেখ করেছিলেন। অতঃপর আবূ রুমাইসাহ তৎকৃত ইংরেজি অনুবাদে এ বইতে বিপুল পরিমাণে টীকা সংযোজন করেছেন। মূল্যবান এবং সময়োপযোগী এ সব টীকা দ্বারা বইতে দ্বিতীয়বারের মতো মৌলিকত্বের সংযোজন ঘটলো। বস্তুত এর মাধ্যমে আবূ রুমাইসাহ প্রায় সাড়ে ছয়শত বছর আগের অমূল্য জ্ঞানকে অটুট রেখে বর্তমানের সমৃদ্ধিকে এ সাথে সংযোজন করার প্রয়াস গ্রহণ করেছেন। বাংলা ভাষায় অনুবাদের ক্ষেত্রে আবূ রুমাইসাহকে বিশেষভাবে অনুসরণ করা হয়েছে। বইখানা মূলত অনুপ্রেরণামূলক। পাঠককে আখিরাতের চিরস্থায়ী জীবনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের আবশ্যকতা সম্পর্কে অনুপ্রাণিত করাই ছিল গ্রন্থকারের মূল উদ্দেশ্য। আধ্যাত্মিকতার ভাব-রসে পরিপূর্ণ এক অসাধারণ উপস্থাপনায় লেখক তাঁর উদ্দেশ্য সাধনে অগ্রসর হয়েছেন, কিন্তু কুরআন ও হাদীসের স্পষ্ট সীমানাকে অতিক্রম করেন নি। এমনকি আধ্যাত্মিকতার আমেজ আনতে গিয়ে ভাষাগত দূর্বোধ্যতা কিংবা রহস্যময়তার আশ্রয় নেননি। মোটকথা আমার কাছে মনে হয়েছে, যেকোনো পাঠককে কাঙ্খিত বিষয়ে আকৃষ্ট করার জন্য এটি সফল বই। লেখক বইয়ের বিভিন্ন অংশে আলোচনার ফাঁকে কিছু কবিতাংশ উদ্ধৃত করেছেন। কবিতাংশের বাংলা অনুবাদকালে ভাবানুবাদ করা হয়েছে। আশা করি এর ফলে লেখকের মূল-ভাব থেকে বিচ্যুত হতে হয়নি। মহান আল্লাহ আমাদেরকে আখিরাতমুখি জীবন গঠনে এ বই থেকে উপকৃত হওয়ার তওফিক দান করুন, আমীন।