‘বৈরি সংসারও যখন আটকাতে পারে না মেয়েটিকে’, ‘জেবুন্নেসার একজীবন’, ‘রোজিনারা নারী দিবসের অর্থ জানে না’- শিরোনামই বলে দিচ্ছে যে নারী জীবনের নানান দিক নিয়ে এগুলো লেখা। শুধুই কি নারী জীবন? ভঙ্গুর, বৈষম্যপূর্ণ সমাজব্যবস্থা, হেঁশেল থেকে সমাজের উপরিস্তর পর্যন্ত নারীর নিয়ত বাস্তবতা, দুঃখ দহন, মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন তো আছেই। আবার আছে এ বলয় থেকে উত্তরণের জন্য নারীর আজন্ম স্বপ্ন ও লড়াই। সেখানে কখনও সফলতা, পরাধীনতার শেকল ভেঙে স্বাধীনতার নিঃশ্বাস ফেলতে সক্ষম হওয়া, কখনওবা অধরাই রয়ে যাচ্ছে লালিত, কাক্সিক্ষত সেই স্বপ্ন। আমার, আমাদের সবার কথাই ও লিখে যায় অনায়াসে- ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনীর লেখার বিশেষত্ব এখানেই। কেবল সমাজে বিদ্যমান নারী-পুরুষ বৈষম্য বা কোনো একটা সংঘটিত ঘটনার প্রতিবাদমাত্র নয়, একটি সূক্ষ্ম বার্তা থেকে যায় ওর লেখায় যা নারীকে সব প্রতিবন্ধকতা, প্রতিকূলতা পেরিয়ে সামনে এগোনোর সাহস ও শক্তি জোগায়। নৈর্ব্যক্তিক একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে ভাষা ও বুননের জাদুকরী শৈলীতে গল্পগুলো বলে যায় ফুলেশ্বরী। গল্পই’বা বলছি কেন! নিছক প্রেমের গল্প তো এগুলো নয় বরং বলা ভালো, প্রতিবাদী গল্প। তা গল্পই হোক বা নারীবাদী লেখাই হোক, লিখনের গুণেই তা হয়ে ওঠে মহার্ঘ্য। সেদিক বিবেচনায় পাঠককে ধরে রাখতে জানে ফুলেশ্বরী। প্রকাশনী সংস্থা ‘ঘাসফুল’ থেকে বের হচ্ছে ওর লেখাগুলোর সংকলন। ‘যদি দরকার হয় আগুন জ্বালাবো’, মল্লিকা সেনগুপ্তের কবিতা থেকে এ নামকরণেই লেখার সার্থকতা খুঁজে পাবে পাঠকমাত্রই। ওর উত্তরোত্তর মঙ্গল কামনা করি। সুপ্রীতি ধর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, উইমেন চ্যাপ্টার