তারেক খান বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ ভূভাগ আর জনজীবনকে বলিষ্ঠ হাতে তুলে এনেছেন তার বান্ধাল নামের এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্পে। বড় আকার এ উচ্চভিলাষী প্রকল্পের বাইয়ের দিক সবটুকু নয়; অন্তরের প্রযত্নেও উপন্যাসটি যথেষ্ট পরিমাণে ধনী। সেই প্রযত্নের সঙ্গী হয়েছে মানুষের প্রাত্যহিকতা ও সমগ্রতাকে একসূত্রে বাধতে পারার সাফল্য এ উপন্যাসের অসংখ্য মানুষ ব্যক্তিগতভাবেই বাচে বা মরে, কিন্ত সামষ্টিক জীবনের নানা জটিল কায়কারবার থেকে তারা মোটেই বিচ্ছিন্ন নয়। ব্যাপক আয়োজন সেই সামষ্টিক জীবনের। উৎপাদনব্যবস্থা থেকে সামাজিক উৎসব, ক্ষমতাসম্পর্ক থেকে পারিবারিক টানাপোড়েন, বর্ণাঢ্য বেচে থাকা ও সর্বগ্রাসী মৃত্যু পর্যান্ত তার বিস্তার । ঐ অঞ্চলের জনজীবনে তারেক খানের অভিজ্ঞতা ঈর্ষণীয় । সেই অভিজ্ঞতকে উপন্যাসের ছাচে ভালোভাবেই ব্যবহার করেছেন তিনি। প্রচিলিত পদ্ধতি মেনে দিয়েছেন চরিত্রানুগ সংলাপ ও আঞ্চলিক ভাষা । আর বর্ণনার ভাষার ক্ষেত্রে এগিয়েছেন আরো অনেকখানি আঞ্চলিক নামশব্দ ও ক্রিয়াপদ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন বিশেষ অঞ্চলের গভীর বাস্তব। একই সাথে হুশিয়ার থেকেছেন মধ্যত্তি পাঠকের পাঠ স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যাপারেও, যেন অতিরিক্ত অপরিচিত শব্দ খুব বড় বাধা হয়ে না ওঠে।