নিজেকে বলতেন 'দ্বাদশ ব্যক্তি। প্রথম একাদশে ঠাঁই হয়নি যাঁর। দলে আছেন বটে, তাবে অতিরিক্ত হিসেবে। এই থাকার মধ্যে যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে, আছে কিছু অসম্মান, এবং অপরের করুণার দৃষ্টিও। এই বলার মধ্যে কি গোপন অভিমান ছিল মতি নন্দীর ?
তিনি তো যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। লেখকজীবনের প্রথমাবধি। যখন ছাত্র, উত্তর কলকাতার কলেজে পড়েন। সেই শুরুর পর ফিরে তাকাতে হয়নি। পতাকা উড়িয়ে এগিয়ে চলেছেন অপ্রতিহত গতিতে, চিহ্নিত করেছেন। নিজস্ব ভূখণ্ড, ঘোষণা করেছেন তাঁর অনন্য। অবস্থান।
ভালোবাসতেন খেলা হৃদয় ও মেধার সর্বস্থ দিয়ে। জীবন সমগ্রত তাঁর কাছে ছিল। খেলা - স্পোর্টস।
বলেছেন, 'খেলা আর মাঠ আমার কাছে জ্ঞান হওয়া থেকেই একটা ব্যাপার। এটাই অবশেষে আমার জীবিকা হয়েছে। খেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার—মানুষের দেহের গুরুত্ব, দেহ সঞ্চরদের সৌন্দর্য, পরিশ্রম দ্বারা অধীত গুণাবলির প্রকাশ যা কখনো কখনো শিল্প আহাদনের স্তরে উত্তীর্ণ হয়। তার রচনার নির্মেদ ছন্দোময় গদ্য এই পর্যবেক্ষণেরই অবদান।
বাংলা ভাষার এই অনন্য লেখকের ভাবনার একাগ্রতা ও তীক্ষ্ণতা ধারণ করে আছে এমন দশটি চিরকালের উপন্যাস নিয়ে নির্মিত হল। মতি নন্দীর উপন্যাস সমগ্র' দ্বিতীয় খণ্ড। শুরুতে সেই দ্বাদশ ব্যক্তি'। ক্রমে নীল থলি', 'দাঁড়াবার জমি', 'বনানীদের বাড়ি। এভাবে এগিয়ে চলা। আপাতত শেষ 'শিখি'-তে।
Moti Nandi ( জন্ম: ১০ জুলাই ১৯৩১ - মৃত্যু: ৩ জানুয়ারি ২০১০) ছিলেন ভারতের কলকাতা ভিত্তিক একজন বাঙালি লেখক। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মতি নন্দী ছিলেন মূলত ক্রীড়া সাংবাদিক এবং উপন্যাসিক ও শিশু সাহিত্যিক। তিনি আনন্দ পুরস্কার এবং সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেছেন। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস 'কোনি'।