১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসে উজ্জ্বলতম অধ্যায়। এই যুদ্ধকালীন সময়ে প্রত্যেক বাঙালির নিজস্ব একটা গল্প আছে। নানান রঙে বর্ণিল সেইসব স্বকীয় গল্প। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলো যারা তাঁদের কোনদিন ভুলে যাওয়া সম্ভব না, 'ভুলবোনা'- আমাদের অঙ্গীকার। প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ রাখা প্রয়োজন, কারণ এগুলি হচ্ছে ইতিহাসের অসামান্য দলিল। যুদ্ধ শেষে যারা বেঁচে ফিরেছেন, পরবর্তীতে সবার বয়ান আমরা নথিবদ্ধ করতে পারিনি, এ আমাদেরই ব্যর্থতা। বিচ্ছিন্নভাবে কারও কারও কথা রেকর্ড হয়েছে, সামগ্রিক ইতিহাস সংরক্ষণ করা হয়েছে, তবু প্রত্যেক বীরের ব্যক্তিগত বেদনা ও অর্জনের কথা আমরা জানি। না। এমনই একজন মুক্তিযোদ্ধা ডা. মো. জামসেদ আলম। ছাত্রাবস্থায় যুদ্ধে গিয়েছিলেন। যুদ্ধজয় করে ফিরে জীবনের নানা বাঁকে পথ হেঁটেছেন। তারপর স্বাধীনতার এত বছর পরে তাঁর সময় মিলেছে যুদ্ধ অভিজ্ঞতা মলাটবন্দী করার। তাঁর পরের প্রজন্ম ও বংশধরদের জন্য এই গ্রন্থ হবে এক অমূল্য সম্পদ। যেকোন পাঠকের জন্যও সুখ পাঠ্য। সহজ, সরল, সাবলীল ভাষায় বর্ণিত হয়েছে যুদ্ধে অংশ নেয়া একজন চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়ুয়া ছাত্রের একাত্তরের দিনগুলি ।
চিকিৎসক, গবেষক, সংগঠক ও শিক্ষা বিস্তারে নিবেদিত প্রাণ ডা. মোঃ জামশেদ আলম ১৯৭১ সালে মেডিকেলের ছাত্র থাকাকালীন ১১ নং সেক্টরে, সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দেশে ও বিদেশে তাঁর বর্নাঢ্য কর্মময় জীবন । স্রোতের বিপরীতে গিয়ে, চাকচিক্যময় শহুরে জীবন ছেড়ে নিজ গ্রাম সাহেবদি নগরের উন্নয়নে মনোনিবেশ করেছেন ২০০২ সাল থেকে। তাঁকে বলা হয় মিরসরাইয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে পরিবর্তনের আলোকবর্তিকা। প্রিয় জন্মস্থান সাহেবদী নগর (মীরসরাই, চট্টগ্রাম) এর গণ্ডি পেরিয়ে নিজ উপজেলা এমনকি আঞ্চলিক ও জাতীয় পরিমণ্ডলে পরিচিত এক নাম ডা. মো. জামসেদ আলম। ধৈর্য্য, উদারতা, সহনশীলতা, মেধা, অধ্যবসায়, দানশীলতা, কর্ম উদ্দীপনা, পরোপকারীতা, বিনয়, মননশীলতা, অনাড়ম্বরতা, দূরদর্শিতা ইত্যাদি গুণাবলীর সমাহার ঘটেছে তাঁর মধ্যে।