বাংলা ভাষার অনেক কবি জনসমাজের মুখে একক কাব্যপক্তি তুলে দেয়ার জন্যে অমর হয়ে আছেন। যেমন- চণ্ডীদাসের 'সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই'; লালনের 'খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়'; ভারতচন্দ্রের 'আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে'; রবীন্দ্রনাথের 'যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে'; সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের 'ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত'; সুকান্ত ভট্টাচার্যের 'পূর্ণিমা-চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি'; আবদুল গাফফার চৌধুরীর 'আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী/আমি কি ভুলতে পারি। তেমনি, প্রায় চার দশক আগে, ১৯৮৩ সালের মার্চে আমার রচিত মুজিব কবিতার ‘মুজিব আমার স্বাধীনতার অমর কাব্যের কবি' পঙ্ক্তিটি বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর সেই সন্ত্রস্ত সময়ে সাহসী উচ্চারণ হিসেবে সারা দেশে দেয়ালে- পোস্টারে খচিত হয়েছে; রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের কণ্ঠে বক্তৃতায়-শ্লোগানে ধ্বনিত হয়েছে; এবং কবিতাটি শিশু-কিশোরসহ বহু আবৃত্তিকারের কণ্ঠে উচ্চারিত ও সংগীতশিল্পীদের কণ্ঠে গীত হয়ে চলেছে। মুজিববর্ষে পঙ্ক্তিটিকে চৌত্রিশতম জাতীয় কবিতা উৎসবের মর্মবাণী ও কবিতাটিকে উৎসব সংগীত হিসেবে নির্বাচন করা হয়। এভাবে ‘মুজিব আমার স্বাধীনতার অমর কাব্যের কবি'- এই পঙক্তিটি বঙ্গবন্ধু মুজিবের নামের সঙ্গে মানুষের মুখে মুখে ধ্বনিত হয়ে চলেছে। আমার মতোন সামান্য কবির পক্ষে এ এক পরম পাওয়া বৈ কী! তাই বর্তমান গ্রন্থের নাম দিয়েছি: মুজিব আমার স্বাধীনতার অমর কাব্যের কবি।