ঘোষণা দিয়ে দ্রুত মিনার ত্যাগ করে প্রাসাদের ভেতরে অবস্থান নেয় প্রহরী যে যার মতো চলে যাচ্ছে নিজ নিজ গন্তব্যে। সৈন্যরা ফিরে যাচ্ছে কয়েকদিনের জন্য তার নিজ নিজ গৃহে। আপাতত কয়েকদিনের জন্য বিশ্রামের জন্য পাঠিয়েছেন তাদের। পরিবারের লোকজন তার প্রিয় মানুষকে চোখমুখে খুশির ঝিলিক ফুটে উঠেছে। যোদ্ধাদের নিতে পরিবারের সকলে এসে হাজির হয়েছেন! কিছু যোদ্ধাদের পরিবারে নেমে এসেছে বিষণ্ণতা! তাদের পরিবারের একজনকে হারিয়ে দিয়েছে জীবনের তরে। চাইলেও কোনোদিন তার সাথে মোলাকাত করা সম্ভব না। কিছু পরিবারের লোকেদের মনক্ষুণ্ণ সামান্য হলেও বেশ খুশি। যে যার মতো বাড়ি ফিরছেন তবে সেনাপতি রিবিয়ানের ভাই এ সকল কিছু উপেক্ষা করে বহু আগে ময়দান ত্যাগ করেছেন। রাজা রন ইওহার্ডের কঠিন স্বরে বলা কথাগুলো শুনে তার রাগ দেহের সীমা অতিক্রম করে গেছিল। বহু কষ্টে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন! সেনাপতি রিবিয়ান একজন বিশ্বাসঘাতক শুনে মুহূর্তের মাঝে উপস্থিত জনতার মাঝে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল! কিছুতেই তাদের মাথায় কথাগুলোর অনুপ্রবেশ ঘটেছে না। তবু গুঞ্জন এবং যোদ্ধাদের সম্মতিতে সকল কিছু বুঝতে সক্ষম হন। যোদ্ধারা নিজ নিজ পরিবারের কাছে ময়দানে তাদের সাথে এবং চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো স্বল্প আকারে তুলে ধরার আপ্রাণ প্রচেষ্টা। যাতে বুঝা যায় রন ইওহার্ড একজন বিত্তশালী বীর! মূল ফটক পেরিয়ে প্রাসাদের ভেতরে প্রবেশ করেন রাজা রন ইওহার্ড এবং রানি ডায়ানা। বারন্দা দিয়ে হাঁটতে লাগেন উভয়ে। কিছু সময় বাদে চার তলায় অবস্থান করেন তারা। সিঁড়ি বেয়ে চারতলার বারান্দায় অবস্থান নিতে ডান এবং বাম দিকে দুটো সরু রাস্তা দেখা যায়। ডান দিকে হেঁটে কিছুদূর অগ্রসর হলে রাজা রন ইওহার্ড এবং রানি ডায়ানার কক্ষ। এবং বাম দিকে কিছুদূর হেঁটে অগ্রসর হলে রাজা অরগাড এবং রানি নিয়ানোর কক্ষ। সিঁড়িতে অবস্থান করে বাম দিকে মোড় দিতে নেয় রাজা রন ইওহার্ড। পেছন থেকে তার জামা আঁকড়ে ধরেন রানি ডায়ানা। গম্ভীর দৃষ্টিতে তার দিকে তাকান তিনি। কিন্তু সেদিকে পাত্তা না দিয়ে হাতের মুঠোয় জামা আঁকড়ে ধরে রাখেন রানি। শেষে বাধ্য হয়ে মৃদু কঠিন স্বরে প্রশ্ন রাখলেন রাজা রন ইওহার্ড, ‘কী হলো তোমার? এভাবে জামা টেনে ধরে রাখলে কেন?’ প্রত্যুত্তরে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে চেহারায় গম্ভীর ভাব বিদ্যমান রেখে বলেন, ‘আপনার মনে নেই একটু আগে কী বলছিলেন? এখন আবার অন্যের কক্ষের দিকে পা বাড়াচ্ছেন কেন?’ ভাবুক হয়ে স্মৃতিচারণ করতে লাগলেন রাজা রন ইওহার্ড। ক্ষণিক সময় অতিবাহিত হয়ে মস্তিষ্কে চাপ করায় নিউরনে থাকা সিনান্সগুলো জাগ্রত হয়ে যায়। ‘ওহ্! মনে পড়েছে। আচ্ছা যাব তো আমাদের কক্ষে। এখন নাহয় একটু রাজা অরগাড এবং উপ সেনাপতি হিতামের সাথে আলাপ করে আসি! এমনিতেও অরগাড হাতে আঘাত পেয়েছেন। তা দেখা দরকার!’ স্বাভাবিক হয়ে প্রত্যুত্তর করলেন তিনি। ব্যগ্র হয়ে জানতে চাইলেন রানি ডায়ানা, ‘কী বলছেন? মহারাজ অরগাডের কী হয়েছে?’ জবাব না দিয়ে ইশারায় তার পিছুপিছু চলতে বলেন রন ইওহার্ড। রানি ডায়ানার মন কেমন খচখচ করছে! অস্থিরতা অনুভব হচ্ছে দেহে! কারণ স্বরূপ বলা যায় পিতার আঘাতপ্রাপ্ত বিষয় নিয়ে চিন্তিত হওয়ায়! বারান্দা দিয়ে তারা দুজন হাঁটতে হাঁটতে কিছু সময় পর উপস্থিত হয় প্রবেশদ্বারের কাছে। দ্বারে থাকা প্রহরীগুলো রাজা রন ইওহার্ডকে দেখা মাত্র মাথা নিচু করে কুর্নিশ জানায়। বিলম্ব না করে তৎক্ষণাৎ দ্বারের পাল্লা খুলে দেয়! ধ্যান তাদের দিকে না দিয়ে রানি ডায়ানাকে ডান পাশে নিয়ে তার বাম হাত নিজের ডান হাতের মাঝে আবদ্ধ করে কক্ষের ভেতরে প্রবেশ করলেন উভয়ে। কক্ষে প্রবেশ করতে নজরে আসে, রানি নিয়ানো বিছানার এক কর্নারে। তার অপর পাশে বসে আছেন রাজা অরগাড। সামনে কেদারার উপর বসে আছেন উপ সেনাপতি হিতাম। রাজা রন ইওহার্ড এবং রানি ডায়ানাকে কক্ষে দেখে কেদারা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় উপ সেনাপতি হিতাম। তা দেখে রাজা রন ইওহার্ড বাম হাত উঁচু করে ইশারায় বসতে বলেন তাকে। কক্ষের মাঝে তখনো রানি ডায়ানা এবং রাজা রন ইওহার্ড একে অপরের হাত শক্ত করে আঁকড়ে ধরে আছেন।
যাবেদ খান আবু বকর। মাতার নাম ফরিদা খান। ২০০৩ সালের মহান বিজয় দিবস দিবাগত রাতে মায়ের কোল আলোকিত করে ভুমিষ্ট হন তিনি। ঢাকা বিভাগের শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায় তার জন্ম। লোনসিং উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি মাধ্যমিক পাশ করেন। নড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন। অতঃপর একই কলেজের অধীনে বিবিএস প্রথম বর্ষে বর্তমানে অধ্যয়নরত অবস্থায় রয়েছেন। লেখালিখির যাত্রাটা তার খুব বেশি বড়োও না আবার ছোটোও নয়। ছোটোবেলা থেকেই তার গল্পের প্রতি আলাদা অনুভূতি ছিল। সেখান থেকে ধীরে ধীরে আগ্রহটা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি প্রথম গল্প লিখেন। দীর্ঘ দিন লেখালিখির পর অতঃপর বইয়ের পাতায় নিজের নাম দেখার ইচ্ছা পোষণ করেন। সেখান থেকেই তিনি তার মারমেইড সিরিজের তিনটি বই লিখেছেন। তার সৃষ্ট মারমেইড সিরিজে রয়েছে ‘সি অব মারমেইড, কিং অব মারমেইড এবং দ্য রিটার্ন অব মারমেইড’। পাঠকদের ভালোবাসা কামনা করছেন তিনি।