একালের রূপকথার মানুষগুলো’ একটি গল্পগ্রন্থ। এই রূপকথার মানুষগুলো কারা? রূপকথা মানে তো সেই প্রাচীনকালের অসম্ভব, অবিশ্বাস্য, চমকপ্রদ সব কীর্তি—কাণ্ড। তবে বাস্তবেও কখনো কখনো এমন ঘটে। নতুন যুগের কোনো কোনো মানুষের জীবনধারা রূপকথার সেই চিরন্তনত্বকেও হার মানায়। তেমনি এক মহান বীরপুরুষ আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি তাঁর স্বপ্নের প্রতিরূপ একটি দেশ। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আকুতোভয় সংগ্রাম, অসামান্য মেধা, মনন, প্রজ্ঞা ছাড়াও ছিল তাঁর সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামমুখর জীবনের নানা পর্যায়ে অনিবার্যভাবে জড়িয়ে পড়েছিল তাঁর পরিবারের প্রতিটি সদস্য। বঙ্গবন্ধু—পরিবার ছিল মানবিক গুণসম্পন্ন, উদারমনা হাসিখুশি এক মিষ্টি পরিবার। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছিল মায়ামমতাময় নিবিড় সম্পর্ক। এমন সুদৃঢ় সম্পর্ক যে, মৃত্যুর সময়ও তা শিথিল হয়ে যায়নি। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা এবং তাঁদের প্রিয় তিন পুত্রও সঙ্গী হয়েছেন নিমর্ম অন্তিমযাত্রায়। বিদেশে অবস্থান করায় ভাগ্যক্রমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। স্বজন হারানোর কঠিনতম শোক জয় করে তারা বেঁচে আছেন রূপকথার রাজকন্যার মতো। বঙ্গবন্ধু—পরিবারের এসব ঘটনাপ্রবাহ এ কালের রূপকথাই তো! বঙ্গবন্ধু—পরিবারের সাত সদস্য গল্পগুলোর কেন্দ্রীয় চরিত্র। তাঁদের জীবন থেকে গল্পগুলোর রসদ অনুষঙ্গ সংগ্রহ করা হয়েছে। অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা—তথ্য এখানে পরিবেশন করা হয়েছে গল্পের আঙ্গিকে। ঘটনা—তথ্যগুলো এত চমকপ্রদ যে, কল্পনা সেখানে হার মানে। তাই কল্পনার সামান্য যেটুকু আশ্রয় নেওয়া হয়েছে, তা একান্তই শিল্পের প্রয়োজনে। বাস্তব চরিত্রগুলোর মানবীয় গুণ আদর্শ ঐশ্বর্যই গল্পগুলোর প্রাণশক্তি। সাহিত্যশিল্পী সুজন বড়–য়ার এ এক অপূর্ব ব্যঞ্জনাময় সাহিত্যকর্ম।
জন্ম : ১৮ এপ্রিল ১৯৫৯, জন্মস্থান : সিলোনীয়া, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম। শিক্ষা : ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর (১৯৮৩), কর্মজীবন : বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর প্রকাশনা বিভাগে কর্মরত।