গ্রন্থের নাম ‘ককপিটে কন্যাদান’। নামটির মধ্যে নিহিত ছান্দিক মমতা বিজড়িত নিটোল কাব্যিক দ্যোতনা, বিজ্ঞতার ছেঁায়া আর অনাবিল রহস্যের বিপুল হাতছানি। মোশাররফ খান আসলে এমনি প্রজ্ঞার সঙ্গে রহস্য, রহস্যের সঙ্গে কৌতূহল আর কৌতূহলের সঙ্গে জানা—অজানার বিশাল এক জগৎ তার চারপাশ ঘিরে আবর্তিত। এটি যেমন সরল তেমন জটিল আবার তেমন আগ্রহোদ্দীপক। এ তাঁর স্বব্রহ্মাণ্ডের কলতান হলেও গ্রাহ্যতায় একদম সার্বজনীন। তাঁর লেখায় দার্শনিক মানবিকতার সঙ্গে প্রাত্যহিক জীবনের আনুপূর্বিক বর্ণনা নিটোল অভিজ্ঞতার অতুলনীয় সার। আমি তাঁর যতগুলো বই পড়েছি সবকটি অভিভূত করেছে। অভিভূত করেছে এজন্যই যে, তিনি লেখাকে শুধু কলম দিয়ে লেখেননি; অর্জিত অভিজ্ঞতাকে মগজের মধ্যে নানা প্রক্রিয়ায় পরিশীলিত করে বৈশি^ক অনুভবে উপস্থাপন করেছেন। বাংলাদেশে জন্ম হলেও বিশে^র অনেক দেশে দীর্ঘকাল ভ্রমণ ও অবস্থান তাঁকে এবং একই সঙ্গে তাঁর চিন্তাভাবনা ও লেখাকে বিশ^মানের মাধুর্যে উন্নীত করেছে। ছোটো ছোটো বাক্যে নিজের অন্তর্নিহিত অভিজ্ঞতাকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতায় উপস্থাপন করার মাধ্যমে তিনি তাঁর লেখাকে অনুকরণ—ব্যর্থ অথচ অনুকরণীয় মানে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। সাবলীল ভাষায় সহজবোধ্য উপায়ে লেখা কঠিন হলেও মোশাররফ খান তা চমৎকারভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছেন। প্রতিটি গল্প যেমন আকর্ষণীয় তেমনি অনুভবে আলোড়ন তোলার মতো তথ্যে ভরপুর। আমি তাঁর লেখা শুধু পড়ি না, সৌন্দর্য বর্ধক পরিধেয় হিসেবে পরিও। লেখা পড়ে ওই পড়াকে পরিধেয় হিসেবে ধারণ করে নিজেকে বিকশিতর করার চেষ্টা সত্যি অনুপম। আমি তাঁর এবং তাঁর লেখালিখির সমৃদ্ধি কামনা করি। ড. মোহাম্মদ আমীন