পৃথিবীর সকল শিল্পের সমষ্টিগত শিল্পই হচ্ছে পর্যটন। কেউ কেউ পর্যটনকে সকল শিল্পের প্রধান শিল্প বলে থাকেন। পৃথিবীতে এমন কোন শিল্প নেই যা পর্যটন শিল্পের আওতাভুক্ত নয়। সবকিছু এ শিল্পের অন্তর্ভুক্ত। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন কর্মকান্ড হচ্ছে পর্যটন এবং সেবা খাত। পৃথিবীর বিভিনড়ব শিল্পকর্ম, সাহিত্য ও চলচ্চিত্রে পর্যটন ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করছে। এটি এমন একটি শিল্প যেখানে ক্রেতারা পণ্য বা সেবা ক্রয় করতে আসে। ফলে অনেক ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সৃষ্টি হয়। তথ্য প্রযুক্তির উনড়বয়নের ফলে এ শিল্পের পরিধি ও কর্মকান্ড দ্রুত বিস্তার লাভ করেছে। সবচেয়ে দ্রুত কর্মসংস্তানও এ শিল্পে সৃষ্টি হচ্ছে। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, এ শিল্পের কোন শেষ নেই। পর্যটন শিল্প পৃথিবী থেকে কখনোই হারিয়ে যাবে না। প্রযুক্তিগত উনড়বতির সাথে সাথে এর পরিবর্তন সঠিকভাবে হবে। পর্যটন শিল্প বিভিনড়ব আঙ্গিকে এবং নানাভাবে টিকে থাকবে। মানব সভ্যতা যতদিন টিকে থাকবে পর্যটন শিল্পও ততদিন টিকে থাকবে। মানব সভ্যতা এবং পর্যটন শিল্প পরস্পরের সম্পূরক এবং পরিপূরক। পর্যটন শিল্প গ্রীক, রোমান এমনকি মেসোপটেমিয়ার সভ্যতায়ও ছিল এবং বর্তমান দুনিয়াও বিদ্যমান আছে। প্রতিনিয়ত এর পরিধি এমনভাবে বাড়ছে যা এখন পৃথিবীর সবচেয়ে একক বৃহত্তম ও দ্রুত বর্ধনশীল শিল্পে পরিগণিত হয়েছে। এ শিল্পের অবদান বিশ্বের জিডিপি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশেও এর পরিধি বাড়ছে। বাংলাদেশ তথা পৃথিবীর অনেক দেশেই জগদ্বিখ্যাত ভ্রমণ লেখক রয়েছেন। চমৎকার চমৎকার বিশ্ব ভ্রমণের বই আছে তাদের। সমস্যা হচ্ছে পর্যটন শিল্পের মৌলিক বইয়ের এখনো যথেষ্ট সংকট রয়েছে। পর্যটন শিল্পের ইতিবৃত্ত বইটি মূলত পর্যটন শিল্পের মৌলিক বিষয়গুলো পাঠকদের জন্য সংক্ষিপ্ত পরিসরে তুলে ধরা হয়েছে। এই বইতে একক বৃহত্তম শিল্প পর্যটনের মূল উপাদানগুলো ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যাতে এই শিল্পের প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো বুঝে এর উনড়বয়নে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা এই বইতে বিভিনড়ব শিরোনামে ছোট ছোট প্রবন্ধকারে সহজ ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি বইটি সকল শ্রেণির পাঠকদের কাছে উপভোগ্য হবে। বইয়ের লেখায় সকল প্রকার বাহুল্যতা বা অপ্রয়োজনীয় উপমা পরিহার করা হয়েছে। এখানে ভ্রমণ কাহিনীর চাইতে পর্যটন শিল্পের মৌলিক উপাদানগুলোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।