ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা গণআদালতে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে সারা বাংলাদেশে আলোড়ন তুলেছিলেন জাহানারা ইমাম। ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চে অনুষ্ঠিত এই আদালতের রায় বাস্তবায়নের জন্য তিনি এক অভূতপূর্ব আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তা৭র আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েচিলেন তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী শেখ হাসিনা এবং একশতজন সংসদ সদস্যসহ সমাজের সকল স্তরের মানুষ। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের প্রকৃত বিচার তারপরও হয়নি, না তাঁর জীবনকালে, না তাঁর মৃত্যুর পর। গণআদালতের সংগঠকদের একজন ছিলেন আসিফ নজরুল। যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের শুরু থেকে তাকে বিভিন্ন সময়ে বহু চিঠি লিখেছিলেন জাহানারা ইমাম। চিঠিতে ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ থাকত, তারচেয়ে অনেক বেশি থাকত গণআদালতের আন্দোলনের কথা। এই আন্দোলন সম্পর্কিত চমকপ্রদ নানা তথ্য। স্মৃতিচরণমূলক এই গ্রন্থ জাহানারা ইমামের চিঠিকে উপজীব্য করে রচিত। এটি যুদ্ধাপরাধী বিরোধী আন্দোলনের এক অনবদ্য বর্ণনা এবং একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আইনগত ও রাজনৈতিক দিকগুলোর একনিষ্ঠ বিশ্লেষণ। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বর্তমান দাবি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মূল্যবান বলে বিবেচিত হওয়ার মতো বহু বিষয় রয়েছে এই গ্রন্থে।
জন্মঃ ১২ জানুয়ারি ১৯৬৬) একজন বাংলাদেশী গবেষক, কলামিস্ট ও সুশীল সমাজের কর্মী। তিনি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। আসিফ নজরুল ১৯৯৯ সালে সোয়াস (স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে জার্মানীর বন শহরের ইনভাইরনমেন্টাল ল' সেন্টার থেকে তিনি পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে একজন কমনওয়েলথ ফেলো হিসেবে কাজ করেন। আসিফ নজরুল একজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। ইউএনডিপি, এডিবিসহ মানবধিকার সংস্থা, আইনের শাসন, পরিবেশগত সমস্যা ইত্যাদি ভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে তে কনসালট্যান্ট হিসাবে কাজ করার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। তিনি প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পূর্বে ১৯৯১ সালে তিনি একটি বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক পত্রিকা বিচিত্রায় কাজ করতেন। তিনি কিছু সময় বাংলাদেশ সরকারের একজন সরকারি কর্মকর্তা (ম্যাজিস্ট্রেট) হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়ায় তাকে প্রায়ই দেখা যায়। যেমনঃ বিবিসি, সিএনএন এবং আল জাজিরা ইত্যাদি। গত শতকের নব্বইয়ের দশকের শুরুতে তিনি একজন ঔপন্যাসিক হিসেবে সুপরিচিত হন। তিনি ৯টি উপন্যাস ও ৪টি নন-ফিকশন গল্প লিখেন।