ফ্ল্যাপে লিখা কথা মিজান সাহেজ এক সকালে তার বাইরের ঘরের দরজা খুলে দেখেন একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে তার দরজার সামনে। মেয়েটা তার মেজো মেয়ের বয়সী, মেজো মেয়ের মতোই অসম্ভব রূপবতী সে। মিজান সাহেব একটু গভীরভাবে খেয়াল করলেন মেয়েটার দিকে হাসলে মেয়েটার গালে টোল পড়ে হাসলে টোল পড়ে তার স্ত্রীর গালেও।
মেয়েটা ঘরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে মিজান সাহেক কিছুটা অবাক হেয় বললেন, ‘তুমি কি এ বাসার কাউকে চেনো? মেয়েটা বলল, ‘না’। ‘কাউকেই চেনো না?’ ‘না আঙ্কেল, কাউকেই চিনি না’। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে-মিজান সাহেব কী পছন্দ করেন, না অকপটে সেটা বলে দিচ্ছে মেয়েটা। বলে দিচ্ছে মিজান সাহেবের স্ত্রী, দু ছেলে, তিন মেয়েরও সবকিছু।
মেষে মেয়েটা হাসতে হাসতে বলল, ‘আংকেল আমার নাম যূথী। আমি এ বাসার কাউকে চিনি না, কিন্তু আপনাকে চিনি। আমি আপনার বাসায় কয়েকদিন থাকতে এসেছি, আপনি কি থাকতে দেবেন?’ ভীষণ অবাক হেয় যান মিজান সাহেব। যে মেয়েকে তিনি কোনো দিন দেখেননি, ওই মেয়েটা বলসে সে নাকি তাকেচেনে। মেয়েটা আবার কয়েক দিন থাকতে চাইছে তার বাড়িতে । কেন? মেয়েটার দিকে পূর্ণ চোখে মিজান সাহেব আবার তাকালেন। মেয়েটা হাসছে রহস্যময় হাসি!
বর্তমান সময়ের তরুণ বাংলাদেশী লেখকদের তালিকা তৈরি করতে গেলে অনায়েসেই প্রথম সারিতে জায়গা করে নেবেন কথাসাহিত্যিক সুমন্ত আসলাম। তাঁর জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলায়, মা রওশনারা পারুল ও বাবা মরহুম সোহরাব আলী তালুকদার। স্ত্রী ফারজানা ঊর্মি আর মেয়ে সুমর্মীকে নিয়ে গড়ে উঠেছে এই লেখকের সংসার। সিরাজগঞ্জে বাড়ির পারিবারিক লাইব্রেরিতেই বই পড়ার হাতেখড়ি তার। সেই সূত্রে ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠলেও লেখালেখির শুরু ঢাকায় আসার পরে। ছোটগল্পের বই ‘স্বপ্নবেড়ি’ তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই, যা প্রকাশনায় ছিল ‘সময় প্রকাশন’। লেখালেখির পাশাপাশি বর্তমানে তিনি কাজ করছেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষিত করে তুলতে, চাইল্ড ড্রিম সোসাইটি নামের একটি সংগঠনে। এছাড়াও জড়িয়ে আছেন সাংবাদিকতা পেশার সাথে। পাঠক জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিবেচনা করতে গেলে সুমন্ত আসলামের সেরা বই হিসেবে নাম উঠে আসবে ‘হয়তো কেউ এসেছিল’, ‘জানি না কখন’ বা ‘কে তুমি’ অথবা ‘যদি কখনো’ এর মতো জনপ্রিয় সব বই এর নাম । এছাড়াও ‘নীল এই যে আমি!’, ‘আমি আছি কাছাকাছি’, ‘অ্যালিয়ান’, ‘জানালার ওপাশে’, ‘রোল নাম্বার শূন্য’, ‘বীভৎস’, ‘কেউ একজন আসবে বলে’, ‘জিনিয়াস জিনিয়ান’, ‘কোনো কোনো একলা রাত এমন’, ‘তবুও তোমায় আমি’, ‘অনুভব’, ‘মিস্টার ৪২০’, ‘স্পর্শের বাইরে’, ‘ভালো থেকো ভালোবেসে’, ‘ডাঁটি ভাঙা চশমা রাফিদ’, ‘অযান্ত্রিক’, ‘জ্যোৎস্না নিমন্ত্রণ’, ‘প্রিয়ব্রতর ব্যক্তিগত পাপ’, ‘জ্যোৎস্না বিলাস’, ‘মহাকিপ্পন’, ‘তপুর চালাকি’, ‘আশ্চর্য তুমিও!’, ‘হাফ সার্কেল’, ‘কঞ্জুস’, ‘মাঝরাতে সে যখন একা’, ‘আই এম গুড ডু’, ‘আই সে দ্য সান’, ‘তুমি ছুঁয়ে যাও বৃষ্টি তবু’সহ আরো অনেক বই রয়েছে লেখক সুমন্ত আসলাম এর বই সমগ্র এর তালিকায়। এছাড়াও সিরিজ আকারে লিখেছেন ‘বাউন্ডুলে’ ও ‘পাঁচ গোয়েন্দা’র মতো জনপ্রিয় কিছু বই। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের কাছে, এমনকি একুশে বই মেলাতেও সুমন্ত আসলাম এর বই সমূহ এর ব্যাপক চাহিদা লক্ষ্য করা যায়। ভাষাগত সারল্য ও সাবলীলতা তাঁর জনপ্রিয়তার অন্যতম বড় কারণ। মানুষকে কেন্দ্র করে তাকে আবর্তিত করে যা যা আছে তা-ই মূলত তার লেখার বিষয়বস্তু।