ফ্ল্যাপে লিখা কথা টিংকু আর সুমিত হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে-ঠগবাজি করবে তারা । এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে হৃদয় হু হু করা একটা কারণ আছে। সেই কারণটা জানার আগে সবাই জেনে যাবে, তাদের ঠগবাজির বিভিন্ন কৌশল। কী অদ্ভুত আর বুদ্ধিমত্তার সাথে ঠগবাজিগুলো করেছে তারা। মাঝে মাঝে মনে হবে, এত সহজ ঠগবাজি করা! পরক্ষণেই মনে হবে কী ভয়ংকর, কী দুঃসাহসী। এই ঠগবাজি করতে করতে একটা মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় ওদের। মেয়েটির নামে লিজা। মেয়েটাকেও ঠকিয়েছিল তারা। দুদিন পর মেয়েটা তাদের মেস বাড়িতে এসে উপস্থিত। একটা কাজ করে দিতে হবে তার। কাজটার কথা শুনে টিংকু বলে , ‘কাজটা করা কঠিন কিছু না। তবে অনেক বুদ্ধি খরচ করতে হবে’। ‘সে জন্যেই তো আপানাদের খুঁজে বের করা।’
‘কাজটা কবে শেষ করতে হবে?’ ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব । তবে আজ থেকে কাজটা শুরু হবে। যতদিন লাগুনক এর জন্য আপনার প্রতিদিন এক্সট্রা এক হাজার টাকা করে পাবেন।’ ‘না, ওই এক্সট্রা টাকা লাগবে না। আপনি আমাকে দুই লাখ টাকা দিতে চেয়েছেন, কিন্তু আমাকে দিতে হবে তিন লাখ টাকা।’ লিজা কোনো রকম চিন্তা ও দ্বিধা না করতে বলল, ‘ওকে, তিন লাখ। কোনে অগ্রীম লাগবে?’ ‘না। তবে দু-একটা জিনিস লাগবে আমাদের।’ ব্যাগ থেকে কাগজ আর কলম বের করে লিজা বলল, ‘জিনিসগুলোর নাম লিখে দিন, রাতের মধ্যে পেয়ে যাবেন সবকিছু।’ বুদ্ধিমত্তা আর সফলতার সঙ্গে কাজটা করে দেয় টিংকু আর সুমিত। তারপর জীবনটা পাল্টে যেতে থাকে তাদের । কিন্তু হঠাৎ করে তারা আরেকটা সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যরকম সিদ্ধান্ত, অন্যরকম এক সিদ্ধান্ত।
বর্তমান সময়ের তরুণ বাংলাদেশী লেখকদের তালিকা তৈরি করতে গেলে অনায়েসেই প্রথম সারিতে জায়গা করে নেবেন কথাসাহিত্যিক সুমন্ত আসলাম। তাঁর জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলায়, মা রওশনারা পারুল ও বাবা মরহুম সোহরাব আলী তালুকদার। স্ত্রী ফারজানা ঊর্মি আর মেয়ে সুমর্মীকে নিয়ে গড়ে উঠেছে এই লেখকের সংসার। সিরাজগঞ্জে বাড়ির পারিবারিক লাইব্রেরিতেই বই পড়ার হাতেখড়ি তার। সেই সূত্রে ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠলেও লেখালেখির শুরু ঢাকায় আসার পরে। ছোটগল্পের বই ‘স্বপ্নবেড়ি’ তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই, যা প্রকাশনায় ছিল ‘সময় প্রকাশন’। লেখালেখির পাশাপাশি বর্তমানে তিনি কাজ করছেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষিত করে তুলতে, চাইল্ড ড্রিম সোসাইটি নামের একটি সংগঠনে। এছাড়াও জড়িয়ে আছেন সাংবাদিকতা পেশার সাথে। পাঠক জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিবেচনা করতে গেলে সুমন্ত আসলামের সেরা বই হিসেবে নাম উঠে আসবে ‘হয়তো কেউ এসেছিল’, ‘জানি না কখন’ বা ‘কে তুমি’ অথবা ‘যদি কখনো’ এর মতো জনপ্রিয় সব বই এর নাম । এছাড়াও ‘নীল এই যে আমি!’, ‘আমি আছি কাছাকাছি’, ‘অ্যালিয়ান’, ‘জানালার ওপাশে’, ‘রোল নাম্বার শূন্য’, ‘বীভৎস’, ‘কেউ একজন আসবে বলে’, ‘জিনিয়াস জিনিয়ান’, ‘কোনো কোনো একলা রাত এমন’, ‘তবুও তোমায় আমি’, ‘অনুভব’, ‘মিস্টার ৪২০’, ‘স্পর্শের বাইরে’, ‘ভালো থেকো ভালোবেসে’, ‘ডাঁটি ভাঙা চশমা রাফিদ’, ‘অযান্ত্রিক’, ‘জ্যোৎস্না নিমন্ত্রণ’, ‘প্রিয়ব্রতর ব্যক্তিগত পাপ’, ‘জ্যোৎস্না বিলাস’, ‘মহাকিপ্পন’, ‘তপুর চালাকি’, ‘আশ্চর্য তুমিও!’, ‘হাফ সার্কেল’, ‘কঞ্জুস’, ‘মাঝরাতে সে যখন একা’, ‘আই এম গুড ডু’, ‘আই সে দ্য সান’, ‘তুমি ছুঁয়ে যাও বৃষ্টি তবু’সহ আরো অনেক বই রয়েছে লেখক সুমন্ত আসলাম এর বই সমগ্র এর তালিকায়। এছাড়াও সিরিজ আকারে লিখেছেন ‘বাউন্ডুলে’ ও ‘পাঁচ গোয়েন্দা’র মতো জনপ্রিয় কিছু বই। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের কাছে, এমনকি একুশে বই মেলাতেও সুমন্ত আসলাম এর বই সমূহ এর ব্যাপক চাহিদা লক্ষ্য করা যায়। ভাষাগত সারল্য ও সাবলীলতা তাঁর জনপ্রিয়তার অন্যতম বড় কারণ। মানুষকে কেন্দ্র করে তাকে আবর্তিত করে যা যা আছে তা-ই মূলত তার লেখার বিষয়বস্তু।