ফ্ল্যাপে লিখা কথা সুফিয়া কামাল জীবনব্যাপী কাজের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষের কাছে মাতৃস্বরূপা হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর বিবেক , তাঁর সাহস, তাঁর দেশপ্রেম কিংবদন্তিসম। তিনি যেন হয়ে উঠেছিলেন দেশামাতৃকারই এক প্রতিচ্ছবি। কবি সুফিয়া কামাল আজীবন কাব্যসাধনা করলেও শুধু এর মধ্যেই নিজেকে সীমাবদ্ধত রাখেননি। দেশ ও দেশের মানুষের কল্যানই ছিল তাঁর আজীবনের সাধনা। নারীর মুক্তি ও মানবধিকার প্রতিষ্ঠায় আমৃত্যু ভূীমকা পালন রেখেছেন। পরম ধার্মিক এই মানুষটি ছিলেন দৃঢ়ভাবে অসাম্প্রদায়িক । নীতির প্রশ্নে কখনো আপস করেননি।
রবীন্দ্রসংগীত তাঁর কাছে ছিল এবাদতের মতো- এ কথা বলায় হুমকি এলেও তিনি তাঁর কথা থেকে সরে যাননি। সুফিয়া কামালের জন্ম ১৯১১ সালের ২০ জুন। মৃত্যু ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর। মহান এই মানুষটি বেঁচে থাকবেন এ দেশের মানুষের ভালোবাসায়। নবীন প্রজন্মের কাছে তাকে তুলে ধরতে এই জীবনীগ্রন্থ।
যারা খুব কাছে থেকে এই মহিয়সী মানুষটিকে দেখেছেন, তাদের বর্ণনা আর তাকে না দেখে বর্ণনা এ দুয়ের মাঝে বিস্তর তফাৎ। নাসিমা হক দেখেছেন সাহসিকা সুফিয়া কামালকে, শতাব্দীর পর শতাব্দী চলে যাবে কিন্তু সুফিয়া কামাল থেকে যাবেন বাঙালির প্রেরণাদাত্রী হয়ে সবার মনে। তার সম্পর্কিত এই বই নতুন কিছু তুলে ধরবে পাঠকের কাছে। পাঠক পরিচিত হবেন নতুন এক সাহসিকার সাথে নতুন আলাপে
নাসিমা হক ছাত্রজীবন থেকে এ দেশের ছাত্র-জনতার গণতন্ত্রের সংগ্রামের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন । '৬৯-এর গণতন্ত্রের সংগ্রামে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার সঙ্গে ব্যাপক নারীসমাজও অংশগ্রহণ করে। সে সময় সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে সংগঠিত হন নারীরাও। সে সময় থেকে লেখকও যুক্ত হন এ দেশের নারী আন্দোলনের সঙ্গে । এর সুবাদে সুফিয়া কামালকে কাছে থেকে দেখার সুযােগ পেয়েছেন তিনি। কেবল তা-ই নয়, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর সান্নিধ্যে থেকে জীবনের দীক্ষা নিয়েছেন। ছাত্রজীবন শেষে লেখক যুক্ত হন সাংবাদিকতায় । দৈনিক সংবাদ-এ বার্তা বিভাগ শিফট ইনচার্জ, দৈনিক জনকণ্ঠএ সহকারী সম্পাদক ও মাসিক চারবেলা চারদিক-এর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। সংবাদপত্রে নিয়মিত কলাম লিখেছেন। দৈনিক সংবাদ-এ ‘সাম্প্রতিক' শিরােনামে তার কলাম অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল ।