'স্বপ্ন জয়ের ইচ্ছা' গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এর ভাষণ সংকলন। ২০১৩ সালের এপ্রিল হতে ২০১৮ সালের এপ্রিল পর্যন্ত দেশে-বিদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ভাষণগুলো নিয়ে স্বপ্ন জয়ের ইচ্ছা সাজানো হয়েছে। ২০১৩ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে জনাব মোঃ আবদুল হামিদ সমাজের সর্বস্তরে ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা, তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্রের বিকাশ ও চর্চা, সকল পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে সুশৃঙ্খল ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতকরণ ও নেতৃত্বের বিকাশসহ বিভিন্ন সমসাময়িক ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। এছাড়া জনগণের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ বাড়াতেও রাষ্ট্রপতি নিরন্তর প্রয়াস চালিয়েছেন। দেশের সর্বজনীন শিক্ষার প্রসারে এবং উচ্চশিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নেও দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন। সশস্ত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে তিনি বাহিনীসমূহের উন্নয়নে পরামর্শ দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়সহ বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রসমূহের সাথে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে তিনি তাঁর বক্তব্য জোরালোভাবে তুলে ধরেছেন। দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় জনগণকে উদ্বুদ্ধ, অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করতে রাষ্ট্রপতির ভাষণসমূহ ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। রাষ্ট্রপতির ভাষণ মূলত আমাদের জাতীয় ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কালের বিচারে এ ভাষণসমূহের গুরুত্ব অপরিসীম। আগামী প্রজন্ম এ ভাষণ থেকে বর্তমান সময়কে যেমন উপলব্ধি করতে পারবে, তেমনি পাবে এগিয়ে যাওয়ার দিকনির্দেশনা। বিদগ্ধ গবেষক ও অনুসন্ধিৎসু পাঠক সমাজের কাছেও এ ভাষণ সংকলন মৌলিক দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে।
আব্দুল হামিদ (জন্ম: ১ জানুয়ারি, ১৯৪৪) বাংলাদেশী প্রবীণ রাজনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি। এর আগে তিনি ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় তিনি ২০১৩ সালে স্বাধীনতা দিবস পদকে ভূষিত হন। তিনি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোঃ তায়েব উদ্দিন এবং মাতার নাম তমিজা খাতুন। তিনি নিকলী জিঃ সিঃ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিকুলেশন এবং কিশোরগঞ্জ সরকারি গুরুদয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি ও বিএ পাশ করেন।গুরুদয়াল কলেজের ভিপি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ঢাকা সেন্ট্রাল ল' কলেজ থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রিও লাভ করেন। কিশোরগঞ্জ জজ কোর্টে ওকালতি করেছেন। কিশোরগঞ্জ বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন বেশ কয়েকবার। ১৯৫৯ সালে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৬১ সালে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন। এবং বেশ কয়েকবার পাকিস্তান সরকার তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১৮ নির্বাচনী এলাকা থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম গণপরিষদেরও সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন।১৭ মার্চ ১৯৭১ সালে কিশোরগঞ্জের রথখোলা মাঠে ছাত্র জনসভায় স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করেন। ৭ মার্চ ১৯৭৩ সালে প্রথম এবং এরপর ১৯৮৬ সাল থেকে কিশোরগঞ্জ থেকে ধারাবাহিকভাবে পরপর ছয়বার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।