এই গ্রন্থে দুটি উপন্যাসেরই কেন্দ্রে রয়েছে ‘বাৎসল্য’। ‘অমৃত সন্ধানে’ উপন্যাসে পুত্র তমালের সঙ্গে হারানো পিতার আত্মিক যোগ এবং হারিয়ে যাওয়া পিতাকে খুঁজে পাওয়ার দুর্মর প্রয়াস কন্যা মীনাক্ষীর। যা প্রমাণ করে সন্তান ও পিতার মধ্যে নাড়ির টান না থাকলেও, থাকে এক অদ্ভুত প্রাণের টান, যে যোগসূত্র আবহমান। ‘সাদা দরজা’-য় শিল্পী অনিন্দ্য পুত্রস্নেহে লালন করে সবুজকে। যা মৃত্যুর দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলা এক ছন্নছাড়া মানুষকে জীবনের পথে ফিরিয়ে আনে। যদিও শেষরক্ষা হয় না। ‘অমৃত সন্ধানে’ কাহিনিতে ছাব্বিশ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া পিতার সন্ধানে তমাল ও মীনাক্ষী কলকাতা থেকে পঞ্চলিঙ্গেশ্বর হয়ে পৌঁছয় হরিদ্বারের কুম্ভমেলায়। বিস্তৃত হরিদ্বার, কনখল, হর কি পৌড়ির আনাচেকানাচে ঘুরেও মিলল কি পিতার সন্ধান? নাকি পিতা স্বেচ্ছায় এড়িয়ে গেলেন? মর্মস্পর্শী এই উপন্যাসে উঠে আসে বিরলতম অতিমারীর কুম্ভ, কুম্ভের ইতিহাস, দর্শন, অতীত-বর্তমান, সেইসঙ্গে জয়দেব-কেন্দুলির ইতিহাস ও মিথ। মনোরম, মায়াময় অদ্ভুত এক ‘সাদা দরজা’। মাঝেমাঝেই ভেসে ওঠে অনিন্দ্যর স্বপ্নে। তালা না-থাকলেও যা খোলা যায় না, অথচ হাতছানি দেয় বারেবারেই। চিত্রকর অনিন্দ্য। এক অনভিপ্রেত ঘটনায় স্ত্রী ত্যাগ করে অনিন্দ্যকে। একা অনিন্দ্য আর্ট ভুলে আঁকড়ে ধরে অ্যালকোহল। এগোতে থাকে স্বেচ্ছামৃত্যুর দিকে। হঠাৎ জীবনে আসে সবুজ। বছর বারোর সামান্য এক বাদাম বিক্রেতার বুদ্ধিমত্তায় অনিন্দ্য যেন খুঁজে পায় নিজেকে। জাগে বাঁচার বাসনা। নতুন জীবন কি পাবে অনিন্দ্য? খুলতে পারবে সাদা দরজা? এক অন্য অনুসন্ধানের কাহিনি এই দুটি উপন্যাস।