ঢাকার মেয়ে সোনালী সম্প্রতি দেশ ছেড়ে আমেরিকার নিউঅরলিন্স শহরে পড়তে এসেছে। সেখানকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেল্থ ডিপার্টমেন্টে দুবছরের মাস্টারস কোর্সের স্কলারশিপ পেয়েছে সে। ঢাকায় পরিবারসহ তার সহপাঠী এবং নব্য প্রেমিক সৌমকে ছেড়ে এসে প্রথম প্রথম ভীষণরকম হোমসিক লাগছিল সোনালীর। একদিন স্থানীয় কিছু বাঙালী পরিবারের সাথে প্রাথমিক পরিচয়পর্বের সময় একজনকে দেখে সোনালী মনে মনে বড়োসড়ো ধাক্কা খেয়েছিল। ড. রিয়াদ খান। লম্বা, সুঠাম একেবারে টল, ডার্ক হ্যান্ডসাম এবং মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলর। তিনি সোনালীর ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর। ভীষণ সুদর্শন আর সুমিষ্ট ব্যবহার তার। বয়স চল্লিশের মাঝামাঝি। জুলফির কাছে হাল্কা রূপালী রেশ একদম জর্জ ক্লুনির মতো। মনের শত ইচ্ছার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেও সোনালী একসময় অসম বয়সী ড. রিয়াদের প্রতি প্রচন্ডরকম আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। সোনালীর মনের দর্পনে প্রতিনিয়ত অপরাধবোধ এসে উঁকি দিয়ে যায়। কিন্তু এ প্রমত্ততা কি শুধু ক্ষণস্থায়ী মোহ? না কি এর মাঝে লুকিয়ে আছে বাঁধভাঙা গভীর ভালোবাসা? চলতে পথে অন্য কাউকে ভালোলেগে যাওয়াটা একেবারে অস্বাভাবিক কিছু না। তবে প্রতিটি সম্পর্ক প্রতিশ্রম্নতি আর দায়িত্ববোধের দাবী রাখে। অবিরাম মান অভিমান, দ্বিধাদ্বন্দ্ব আর সংশয়ের গোলকধাঁধায় সোনালীর হৃদয় এখন দ্বিখন্ডিত। শেষ পর্যন্ত সোনালীর দ্বিধান্বিত হৃদয় কি পারবে সকল বিভ্রম অতিক্রম করতে ?
বিপাশার শৈশব কেটেছে ফুলার রোডে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায়। তার বাবা ছিলেন বায়োকেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের প্রাক্তন চেয়ারম্যান।বাবা-মায়ের উৎসাহে শৈশব থেকেই বিপাশা লেখালেখি করতেন। বাবার চাকুরির সুবাদে বিপাশার শৈশব-কৈশোরের বড় একটা অধ্যায়ে কেটেছে মধ্যপ্রাচ্যে।সেখানে থাকাকালীন সময়ে তিনি ইংরেজি রূপকথা গল্পের বাংলা অনুবাদ করতেন। পরবর্তীতে ঢাকায় উদয়ন বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে বিপাশা পরিবারের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হন। যুক্তরাষ্ট্রে মলিকিউলার বায়োলজি বিষয়ে অনার্স সব আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ডিগ্রির পর তিনি ডক্টরেট অফ মেডিসিন ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি পেশায় সিনিয়র ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। জীবনের সিংহভাগ প্রবাসে কাটালেও পারিবারিক শিক্ষার কারণে। বাংলা ভাষার প্রতি রয়েছে তার প্রবল অনুরাগ। ব্যস্ত পেশার পাশাপাশি বিভিন্ন জনরায় লেখালেখি তার জীবনের একটি নতুন নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বামী এবং একমাত্র পুত্রসহ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের অস্টিন শহরে বসবাস করছেন। বিপাশা বাশারের লেখা বইগুলোঃ ‘মায়াজাল’ (পেন্সিল প্রকাশনী) ২০২১ ‘ছায়াপথে অনুরণন’ (অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী) ২০২২ ‘জ্যোৎস্না রাতে’ (এশিয়া প্রকাশনী) ২০২৩ ‘মন কেমনের জন্মদিন’ (এশিয়া প্রকাশনী) ২০২৩ তাছাড়াও পেনসিল বর্ষপূর্তি সংকলন, হৃদবাংলা উত্তর আমেরিকার সাহিত্য সমাবেশ সংকলন, অন্যপ্রকাশের ‘ভালোবাসা দিবস’ সংকলন সহ আরও বিভিন্ন গল্পসংকলনে তার ছোটগল্প প্রকাশিত হয়েছে।