আমাদের সকলের প্রিয় একটি নাম। যে নামটি মনে এলেই, মুখে এলেই স্নেহময়ী এক মায়ের চেহারা ফুটে উঠে। তিনি ছিলেন আমাদের সকলের আশা-ভরসার স্থল। তিনি আজ আর আমাদের মাঝে নেই। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবার জন্য আজ এখানে আমরা সমবেত হয়েছি। আমি কবি বেগম সুফিয়া কামালের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। তাঁর স্মৃতির কথা বলতে গেলে কত কথা যে মনের পটে ভেসে আসে। ১৯১১ সালের ২০ জুন তিনি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। যে যুগে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন সে যুগে মেয়েদের পর্দার আড়ালে থাকতে হতো। মেয়েদের কোনো অধিকার ছিলো না। আমরা বেগম রোকেয়ার কথা জানি যিনি এই পর্দা ভেঙে মেয়েদেরকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করেছিলেন। কবি সুফিয়া কামাল বেগম রোকেয়ার সন্নিকটে আসেন। তাঁর কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পান। সেইসঙ্গে আমাদের বিদ্রোহী কবি নজরুলের সান্নিধ্য পান। মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন ছিলেন তাঁর অনুপ্রেরণা। এভাবে অগণিত এমনকি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে যাওয়ারও সুযোগ তাঁর হয়েছিল। তাঁর কাছ থেকেও তিনি অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। এ ধরনের অনেক অগণিত জ্ঞানী-গুণী-বুদ্ধিজীবীর সংস্পর্শে এসে নিজেকে তিনি এমনভাবে গড়ে তুলেছিলেন যিনি নিজেই একজন আদর্শ। আমরা আজকে তাঁকে হারিয়েছি।
Lutfur Rahman Reton পুরনো ঢাকার ওয়ারী এলাকায় তার শৈশব অতিবাহিত হয়। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে এইচএসসি পরীক্ষা দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে আবুজর গিফারি কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন। তিনি ২০০১ খ্রিস্টাব্দে জাপানে বাংলাদেশের কালচারাল এটাশে নিযুক্ত হয়েছিলেন। সাবেক সম্পাদক হিসেবে ছোটদের কাগজ (অধুনালুপ্ত); জাপানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাবেক ফার্স্ট সেক্রেটারি (২০০০-২০০১) ছিলেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থ: ছড়া: ধুত্তুরি (১৯৮২); ঢাকা আমার ঢাকা (১৯৮৪); উপস্থিত সুধীবৃন্ধ (১৯৮৪); হিজিবিজি (১৯৮৭); তোমার জন্য (১৯৮৯); ছড়া ও ছবিতে মুক্তিযুদ্ধ (১৯৮৯); রাজাকারের ছড়া (১৯৯৯); শেয়ালের পাঠশালা (১৯৯২); রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মারকগ্রন্থ (২০০০); নেপথ্য কাহিনী (২০০১)। সম্মাননা ও স্বীকৃতি সিকান্দার আবু জাফর সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮২, অগ্রণী ব্যাংক শিশু ,সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮২, ১৯৯৬, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পুরস্কার ১৯৮৪, বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার ২০০৭