দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের সাময়িক আস্ফালন স্তম্ভিত হওয়ার পর এশিয়াতে শুরু হয় নতুন এক দানবের চোখরাঙানি। চিন তার নাম। এশিয়ার অন্যান্য দেশের মধ্যে ছোটখাটো যুদ্ধ হলেও অপর দেশের জমি দখলের ক্ষেত্রে এক জাপানের পর চিনেরই নাম উঠে আসে। সেই ১৯৬২ সালের কথা। মাও ৎসে তুং আর ঝাউ এনলাই-এর চিন আগ্রাসী নীতি নিয়ে এগিয়ে এসেছিল পণ্ডিত নেহরুজির ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে। বুদ্ধের দেশ ভারত আগ বাড়িয়ে যুদ্ধ করেনি, আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছিল। এবং ওই প্রথম ও শেষবারের মতো হেরেছিল। ’৬২ সালের চিন – ভারত যুদ্ধের সমসময়েই বিশ্বের অপর একটি প্রান্তেও দানা বাঁধছিল ভয়ানক যুদ্ধের কালো মেঘ। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র আর সোভিয়েত রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্রের সম্মুখ সমরে জড়াতে চলেছিল। নাম জড়াল কিউবারও। কিউবার প্রেসিডেন্ট তখন ফিদেল কাস্ত্রো। সোভিয়েতের মাথা ছিলেন নিকিতা ক্রুশ্চেভ। আর আমেরিকার? — জন এফ কেনেডি — নাম তো শুনা হি হোগা! বিশ্বের যে কোনও দুটি বিন্দুকে একটি সরলরেখা দিয়ে যুক্ত করে ফেলা যায়। যুদ্ধবাজ দেশগুলির কাহিনি ‘যুযুৎসু’ সেভাবেই জুড়ে গিয়েছে ভারত – চিন এবং মার্কিন – সোভিয়েত দ্বৈরথ। এই দুনিয়ার everything is connected। ইন্দো – সাইনো যুদ্ধের সময়ে ঠিক কী ছিল সুপার পাওয়ার আমেরিকার ভূমিকা? বিগ বস আমেরিকাই কি ছিল যুদ্ধ আরম্ভের নাটের গুরু? নাকি যুদ্ধ থমকে ছিল তার মধ্যস্থতায়? পররাষ্ট্র হরণের চক্রে যে রাষ্ট্রকে বেতাজ বাদশা বলা হয়, দুনিয়ার বামাতিবামদের সঙ্গে যার অহি – নকুল সম্পর্ক, সেই রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রনায়কের কী ভূমিকা ছিল সেই সময়? সত্যিই কি আমেরিকা সাম্রাজ্যবাদী? ব্যবসার খাতিরে, মুনাফার লোভে, খনিজের সন্ধানে নখদন্ত বের করে আমেরিকা কি সত্যিই ঝাঁপিয়ে পড়ে নির্লজ্জের মতো? নাকি নিজেদের সুবিধের জন্যে তথাকথিত সাম্যবাদীরা কি আমেরিকাকে চূড়ান্ত সাম্রাজ্যবাদীর ধড়াচুড়ো প’রিয়ে দিয়েছে? আমেরিকা কি জন্মলগ্ন থেকেই অমনধারা? নাকি সময়ের সঙ্গে নিজেকে শানিয়ে তুলেছে? কী ছিল তার অতীত? কী-ই বা হয়েছে আগামীতে? — এইসব ইতিহাস নিয়েই আসছে ‘যুযুৎসু’। এক রোমাঞ্চকর কাহিনি, যার কোথাও কোনও খাদ নেই।