বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ থেকে একেকটি দুঃসময় পাড়ি দেয়া শত শত হিমালয় কিংবা আল্পস পার হওয়া, মানুষকে জীবনে এমনি কতো অসংখ্য দুঃসময় পাড়ি দিতে হয়; কিন্তু সে দেখতে পায় এই অন্ধকারের ওপারে সূর্যোদয়, কালো মেঘের ওপারে পূর্ণিমা। এই হচ্ছে মানুষের বেঁচে থাকার রক্তাক্ত ইতিহাস। আর জীবনের এই অভিজ্ঞতা থেকেই বোধহয় রচিত হয় কবিতা, কেননা কবিতা তো সর্বদাই এই দুঃখ ও সুখের তিক্ত-মধুর অভিজ্ঞতারই অংশ, নিজের ও সমাজের। এই বইয়ের কবিতাগুলোতেও অনিবার্যভাবেই উঠে এসেছে আমাদের দুঃসময়ের চিত্র, ভেঙে পড়া, থেমে যাওয়া, নিভে যাওয়ার দৃশ্য। প্রস্ফুটিত হওয়ার জন্য উদার উন্মুক্ত জলবায়ু চায় প্রকৃতি, কেবল তার মধ্যেই বেড়ে ওঠে যা-কিছু মহৎ, যা-কিছু সুন্দর। এই কবিতাগুলো গভীরভাবে এসবই ধারণ করে আছে, কীভাবে আমাদের আবেগ, আমাদের ভালোবাসা, আমাদের স্বপ্ন বিপন্ন হচ্ছে। এর পাশাপাশি আছে সেইসব কবিতা যেখানে সামান্য সুখ, ভালোবাসা ও কোমলতার স্পর্শে এই পৃথিবী মধুময় মনে হয়, জীবন মনে হয় সুন্দর। সেইসঙ্গে এখানে দেখতে পাই নগরের যান্ত্রিকতা, আগ্রাসন, মিথ্যাচার, কপটতা কীভাবে ক্রমাগত শুষে নেয় মানুষের আত্মা, ধ্বংস করে তার শুদ্ধতা। এই স্বপ্নহীনতা ও স্বপ্ন নিয়েই 'কালো মেঘের ওপারে পূর্ণিমা'।
Mahadev Saha জন্ম : ২০ শ্রাবণ ১৩৫১, শনিবার, ৫ আগস্ট, ১৯৪৪, সিরাজগঞ্জ জেলার ধানঘাড়া গ্রামে। পিতা : গদাধর সাহা। মাতা : বিরাজমোহিনী। ঢাকা কলেজ, বগুড়া কলেজ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন। প্রথমে বাংলা ও পরে কিছুকাল ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র। লেখালেখির শুরু কৈশোরে । শ্ৰী: নীলা সাহা। দুইপুত্র : তীর্থ ও সৌধ। গ্রন্থসংখ্যা : ১৩০। প্রথম কাব্যগ্রন্থ : এই গৃহ এই সন্ন্যাস। কাব্যগ্রন্থ : ৭৫০। শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা কবিতার বই: ৮। গদ্যগ্রন্থ:১৫। এ পর্যন্ত ভ্ৰমণ করেছেন : জার্মানি, রাশিয়া, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ভারত, উজবেকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। সাহিত্যের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন বহু পুরস্কার; একুশে পদক, বাংলা একাডেমী পুরস্কার, বগুড়া লেখক চক্র পুরস্কার, কবি সুকান্ত সাহিত্য কবিতালাপ পুরস্কার, রেখাচিত্রম সম্মাননা, বাংলাদেশ-কানাডা অ্যাসোশিয়েশন অব ক্যালগেরি সম্মাননা, সংহতি গুণীজন সম্মাননা পদক, লন্ডন, উত্তরা ইউনিভার্সিটি সম্মাননা।