আমাদের বন্ধু মহলে কেউ কেউ জগলুল ও আমাকে ‘মানিকজোড়’ বলত। আমাদের দুজনেরই বাড়ি বৃহত্তর সিলেটে; তার হবিগঞ্জে আর আমার সুনামগঞ্জে। ব্রিটিশ আমলে সিলেট ছিল আসামের একটি জেলা। তার বাবা নাসির উদ্দীন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন আসামের এমএলসি ( মেম্বার লেজিসলেটিভ কাউন্সিল) এবং আমার বাবা মকবুল হোসেন চৌধুরী এমএলএ (মেম্বার লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি)। তাদের দুজনের মধ্যে যথেষ্ট হৃদ্যতা ছিল। পাকিস্তান আমলের শেষ দিকে দ্য পিপল পত্রিকায় জগলুলের সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। পাকিস্তান সেনাবাহিনী পত্রিকার অফিসটি জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছিল। পরে সে রিপোর্টার হিসেবে বাসসে যোগ দেয়। তার কর্মময় জীবনের সবটুকুই কেটেছে বাসসে। জুনিয়র রিপোর্টার থেকে ধাপে ধাপে পদোন্নতি পেয়ে সে এই সংস্থার প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হয়েছিল। কূটনৈতিক রিপোর্টার হিসেবে জগলুল অত্যন্ত কৃতিত্বের পরিচয় দেয়। সে বহু আন্তর্জাতিক সম্মেলন, সেমিনার, দ্বিপক্ষীয় সফর দক্ষতার সঙ্গে কভার করেছে। তার কাজে খুশি হয়ে কর্তৃপক্ষ তাকে বাসস প্রতিনিধি হিসেবে দিল্লিতে প্রেরণ করে। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই জগলুল দিল্লির সাংবাদিক মহলে পরিচিতি লাভ করে। পিটিআইর এক সিনিয়র সাংবাদিক আদর করে তাকে জগলুল নয় ‘বুলবুল’ বলে সম্বোধন করতেন।