সালাত হলো গোলামের সাথে মালিকের Conversation. সালাতে আমরা যা পড়ি তা যদি না বুঝি তাহলে কি কনভারসেশন হয়? দুনিয়ার সবকিছুই বুঝে পড়ি। আল্লাহর সামনে যখন দাড়াই, তখন মন্ত্রের মতো কি পড়ি তা নিজেই বুঝি না। যদি আখিরাতের আদালতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা জিজ্ঞেস করেন, আমার কিতাব ছাড়া আর কোন কোন গ্রন্থ তুমি না বুঝে পড়েছো? তখন কী জবাব দিবেন? “অর্থ বুঝে সালাত আদায়” বইটি কুরআন বুঝার জন্য একটি সহায়ক পন্থা হতে পারে। আল্লাহর রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পড়বে, সে একটি নেকি পাবে, আর প্রতিটি নেকি দশ গুণ করে বৃদ্ধি করে দেওয়া হবে। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মিম মিলে একটি হরফ; বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, এবং মিম আরেকটি হরফ।’ (তিরমিজি, হাদিস ২৯১০) তবে এই হাদিসের মর্ম এই নয় যে-- অর্থ না বুঝে কুরআন পড়ার ওপর স্থির হয়ে বসে থাকতে হবে অথবা অর্থ বোঝার চেষ্টাপ্রচেষ্টা করা লাগবে না। কুরআন যেহেতু আল্লাহর পয়গাম, প্রত্যেক বান্দার জন্য ফরজ হচ্ছে পয়গামকে বুঝে কার্যত বাস্তবায়ন করা। কুরআন শিক্ষার প্রথম ধাপে অথবা যার জন্য অর্থ বুঝে পড়া সম্ভব নয়, তার জন্য হতে পারে অন্তত আল্লাহর কালামের নুরানিয়াত ও রুহানিয়াত উপলব্ধির জন্য হলেও না বুঝে পাঠ করা। মানুষ যেন কোনো আপত্তিতে কুরআন থেকে দূরে না সরে যায়, এই জন্য প্রথম ধাপে না বুঝে হলেও তাকে কুরআন পড়তে হবে। কিন্তু কেবল কুরআন তেলাওয়াত শিখেই বসে থাকলে চলবে না, বরং তাকে আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় বুঝে কুরআন পাঠ করাও জরুরি। কেননা অর্থ বুঝে কুরআন পড়াই কোরআনের দাবি। সালাত আদায় করার সময় আমরা পবিত্র কুরআনের বেশ কিছু সূরা পাঠ করে থাকি। এছাড়া তাছবিহ ও বিভিন্ন দোয়াগুলোও আরবিতে পাঠ করে থাকি। আমরা যদি এ সবকিছুর অর্থ বুঝে করতে চাই তাহলে আমাদের আরবি ভাষার উপর দখল থাকা প্রয়োজন। তাই এ কাজটিকে সহজসাধ্য করার উদ্দেশ্যেই মূলত ‘অর্থ বুঝে সালাত আদায়’ বইটি রচনা করা হয়েছে। বইটিতে কুরআনে উল্লিখিত শব্দগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা দেয়া হয়েছে, যাতে পাঠকরা সহজে নামাজের প্রতিটি সূরা ও দোয়া সহজে হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন। আশা করি বইটি প্রতিটি পাঠককে কুরআন বুঝতে এবং সালাতে পঠিত দোয়া ও সূরাসমূহ বুঝতে সহযোগিতা করবে ইনশাআল্লাহ। -এমদাদুল হক চৌধুরী