“যারা গণিত ভালবাসে” ফ্ল্যাফের লেখা গণিতের সৌন্দর্য যারা একবার পেয়েছে, তারা সবসময় সেই সৌন্দর্যের পূজারী থাকে। তাদের পূজার অর্ঘ্য হয় গণিতের নানান রহস্য, নানান গল্প । গণিতের অফুরন্ত আনন্দ ভাণ্ডার থেকে কয়েকটি বিষয় তুলে আনা হয়েছে এই পুস্তকে। লক্ষ্য হলো যারা গণিত ভালবাসে তাদের ভালবাসাটা যেন আরো পোক্ত হয়। আবার যারা গণিত থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে তাদের জন্যও এই বইয়ে কিছু রসদ রেখে দেওয়া হয়েছে। গণিত অলিম্পিয়াডের কারণে দেশে গণিতের প্রতি ভালবাসা বেড়েছে অনেকখানি। সেই ভালবাসার জোর যত বাড়বে, বদলে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা ততো তীব্র হবে । সূচিপত্র 1. পরশপাথরের খোঁজে 2. নেপিয়ারের অস্থি 3. চার শত পঁচানব্বই 4. রুবিকের কিউব: ধাঁধা ও গণিত 5. প্যাসকেলের ত্রিভুজ 6. অবশিষ্টের পাটীগণিত এবং আলোর গতিতে কম্পিউটিং 7. গণিতের সৌন্দর্য সৌন্দর্যের গণিত 8. সৌন্দর্য যখন পাই-এর মতো 9. চাঁদ কত দূরে 10. সংখ্যার মেরু 11. সদানন্দচন্দনদাস 12. নারিকেল জিঞ্জিরায় পাঁচজন, বানরটা ফাও! 13. দুটি লিথুয়ানিয়ান সমস্যা ও তার সমাধান 14. সমস্যা দশ, সমাধান অনেক 15. ২০টি সমস্যা ও তার সমাধান 16. পরিশিষ্ট 17. গণিতসম্রাট যাদব চক্রবর্তী ও তাঁর পাটীগণিত গ্রন্থ 18. গণিতপ্রেমী মীজানুর রহমান 19. ফিল্ডস মেডেল ও গ্রেগরি পেরেলমেন
সারাংশঃ ‘যারা গণিত ভালবাসে’ বইটি লেখেছেন মুনির হাসান মুনির হাসান-এর জন্ম ২৯ জুলাই, ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রামে। ১৯৯৫ সাল থেকে ভোরের কাগজে এবং ১৯৯৮ সাল থেকে দৈনিক প্রথম আলোয় বিজ্ঞানবিষয়ক সাপ্তাহিক ফিচার পাতার সম্পাদনা করেছেন। ২০০৩ সালে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের সঙ্গে থেকে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে গড়ে তোলেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। বর্তমানে তিনি কমিটির সাধারণ সম্পাদক। বইটি কাদের কাছে খুব বেশি গ্রহণ যোগ হবে তা বইয়ের নাম থেকে বুঝা যায়। কিন্তু যারা গণিত ভালবাসে না কিন্তু শিখতে চাই তাদেরও কথা চিন্তু করে বইটি লেখা হয়েছে, যা এই বইটির সূচিপত্র দেখলেই বুঝা যায়। বইয়েটির কিছু অংশ তুলে ধরা হলঃ পরশপাথরের খোঁজে: ২,১১,১৯,২৩,৫৩ এই সংখ্যাগুলোকে বলা হয়েছে কারণ এই সংখ্যা গুলো মাত্র দুটি গুণনীয়ক অথবা বিভাজক রয়েছে। সে নিজে এবং ১! এর মানে হলো এ সংখ্যাগুলোকে অন্যকোনো সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে ভাগ করা যায় না। মৌলক সংখ্যার ছক: মৌলিক সংখ্যার খোঁজার চেষ্টা যুগ যুগ ধরে গণিতবিদেরা করছেন। এর মধ্যে একটি মজার পদ্ধতি হলো গ্রিক গণিতবিদ ইরাতোসটিনের ছক। ইরাতোসটিন খ্রিষ্টের জন্মের ২৭৫ থেকে ১৯৫ বছর আগে ছিলেন এবং আমরা যে ১ থেকে ১০০এর মধ্যে মৌলিক সংখ্যা খোঁজার জন্য এ ছকটি ব্যবহার করি। আবার ইতালীয় গণিতবিদ পিয়েরে দ্য ফার্মা (১৬০১-১৬৬৫) তাঁর শেষ উপপাদ্যের জন্য জগদ্বিখ্যাত। তিনি মৌলিক সংখ্যার জন্য Fn=2power2powerN 1 সূত্রটি প্রকাশ করেন। রুবিকের কিউব: ১৯৭৪ সালে হাঙ্গেরির ভাস্কর ও স্থাপত্যবিদ্যার অধ্যাপক আরনো রুবিক এই যান্ত্রিক ধাঁধাটি তৈরি করেন এমন সব বিষয় নিয়ে লেখা হয়েছে এই বইটি।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সফলতার গল্পের সাথে যে ব্যক্তির নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তিনি মুনির হাসান। তিনি একইসাথে একজন বিজ্ঞানী, লেখক, ব্লগার ও উদ্যোক্তা, যিনি তারুণ্য ও উদ্যোক্তা এই দুইয়ের মেলবন্ধনে বেকারত্বের বাঁধা ডিঙোতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য উৎসাহ জাগানিয়া প্লাটফর্ম ‘চাকরি খুঁজবো না, চাকরি দেবো’ এর সাড়া জাগানো পথচলা ও সাফল্যের পেছনেও রয়েছে এই মানুষটিরই হাত। মুনির হাসানের আরেকটি পরিচয় হলো- তিনি বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (BdOSN) এর সহকারী প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে মুনির হাসান দৈনিক প্রথম আলোর যুব কর্মসূচী সমন্বয়কের কাজে নিয়োজিত আছেন। মুনির হাসানের জন্ম ১৯৬৬ সালের ২৯ জুলাই বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। সেখানেই সেন্ট মেরিজ, মুসলিম হাই স্কুল ও মুসলিম এডুকেশন সোসাইটিতে শেষ করেন হাই স্কুলের পাঠ। বাকি শিক্ষাজীবন জুড়ে আছে চট্টগ্রাম কলেজ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে অবদান ও সম্পৃক্ততার জন্য বন্ধু মহলে ‘ম্যাথ মুনির’ নামে পরিচিত হলেও বুয়েটে তাঁর পড়ার বিষয় ছিলো ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং। দৈনিক সংবাদের সাপ্তাহিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ফিচার পাতায় লেখালেখি করতে গিয়ে সাহচর্য পেয়েছেন আ. মু. জহুরুল হক, আবদুল্লাহ আল-মুতী, শরফুদ্দিন কিংবা এ আর খানের মতো বিজ্ঞান লেখক ও বিজ্ঞান কর্মীদের। তাঁদের অনুপ্রেরণায়ই বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার কাজে আরও উদ্যমী হয়েছিলেন। বিভিন্ন সময়ে ভোরের কাগজ ও প্রথম আলোর বিজ্ঞান বিষয়ক ফিচার পাতারও করেছেন সম্পাদনা। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে ২০০৩ সালে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের সাহচর্যে গড়ে তোলেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। বর্তমানে সেই সফল কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন মুনির হাসান। তাঁর অসাধারণ সব কাজের সাথে তাল মিলিয়ে, অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সময়ে সময়ে বেশ কিছু বইও লিখেছেন মুনির হাসান। মুনির হাসান এর বই সমগ্র এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- শরবতে বাজিমাত, গ্রোথ হ্যাকিং মার্কেটিং, গল্পে গল্পে ধাঁধা, অঙ্কের ধাঁধা ধাঁধায় অঙ্ক ইত্যাদি। মুনির হাসান এর বই সমূহ এর মধ্যে লেখকের বুয়েটে জীবন নিয়ে লেখা আত্মজৈবনিক বই ‘পড়ো পড়ো পড়ো’ পেয়েছে অসম্ভব পাঠকপ্রিয়তা। তাঁর জীবনেরই মতো মুনির হাসানের বই তাঁর পাঠকদের উদ্দীপিত করে নিজের পছন্দে নিজের জীবন বেছে নিতে ও গড়ে তুলতে।