ভূমিকা বান্দরবান পার্বত্য জেলাটি সবুজের শ্যামলীমায় মৌন নিস্তব্দ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার। স্বর্পিল গতিতে বয়ে চলা এখানকার পাহাড়ী নদী ও ঝিরিগুলো উচ্ছ্বল চঞ্চলতায় প্রবহমান। প্রকৃতির সাজিয়ে দেয়া সবুজের অবারিত পরিবেশে এখানকার উপজাতি-বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে অন্ত রাত্মা যেন লীন হয়ে গেছে।
বান্দরবান জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে আলীকদম উপজেলায় রয়েছে আকাশ চুম্বী গিরিশিখর, ঝর্ণা, জলপ্রপাত, ঘন সবুজ অরণ্য, খরস্রোতা নদ-নদী, উপত্যকা, মালভূমি, রহস্যময় আলী সুডঙ্গ-গিরিপথ ইত্যাদির সমাহার। মায়াবী প্রকৃতির মোহনীয় সাজে সজ্জিত পার্বত্য এ অরণ্য জনপদের প্রতিটি গ্রাম, মৌজা বিশ্বমানের পর্যটনের ঠিকানা হয়ে উঠতে পারে। প্রকৃতি অকৃপন হাতে এখানকার মানুষকে দিয়েছ জীবন ও জীবিকার অবলম্বন। যেদিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় সেদিকেই দেখা যায় সবুজের অনিন্দ্য সুন্দর নিসর্গ।
বান্দরবান জেলার আলীকদম প্রেসক্লাবের সাংবাদিক মমতাজ উদ্দিন আহমদ ও কামরুজ্জামানের রচিত আমার স্নেহের ছাত্র লামা প্রেসক্লাবের সভাপতি রুহুল আমিনের সম্পাদিত ‘প্রেক্ষণ : পার্বত্য চট্টগ্রাম গিরিনন্দিনী আলীকদম’ গ্রন্থটি অমর একুশে বইমেলা ২০০৮- এ ঢাকার প্রান্ত প্রকাশনী কর্তৃক প্রকাশিত হল।
এ বইয়ে আমি ভূমিকা লিখতে পারায় আনন্দবোধ করছি। বইটিতে আলীকদম উপজেলার হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস-ঐতিহ্য, পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর জীবনধারা এবং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উন্নয়ন প্রস্তবনা রয়েছে। তাই বইটি গুরুত্ববহ। ভবিষ্যতে আলীকদমে সরকারী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে বইটি দিক-নির্দেশক হতে পারে বলে আমার বিশ্বাস। মূলত : গবেষক-লেখক ও সম্পাদক সহজবোধ্য প্রাঞ্জল ভাষায় এ জনপদটির বাস্তব চিত্র পাঠক সমাজে তুলে ধরার প্রয়াস চালিয়েছে। তাদের কাজের-চিন্তা-প্রঞ্জার-মননশীলতার চাপ বইটিতে বিদ্যমান।
আমি মনে করি, এলাকার শিক্ষা-সংস্কৃতি-শিল্প-সাহিত্য চর্চা ও সাংবাদিকতা পেশার মানোন্নয়নে এ ধরণের প্রকাশনা আগামী প্রজন্মকে দেশাত্ববোধ ও ঐতিহ্য চেতনায় উদ্বুদ্ধ করবে। আলীকদম প্রেসক্লাবের এ ধরণের মহৎ উদ্যোগকে আমি ব্যক্তিগতভঅবে ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
এই বইটিতে আলীকদমের সার্বিক পরিচিতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও উন্নয়ন সম্ভাবনাময় দিক-নির্দেশনা থাকায় পাঠক সমাজের কাছে পার্বত্য এ উপজেলার পরিচিতি ফুটে উঠবে।
স্নেহাস্পদ লেখক ও সম্পাদকের এই মহতি প্রচেষ্টা আগামী এখানকার জনপদের উন্নয়ন সম্ভাবনায় আলোর পথনির্দেশক হবে। বইটি সর্ব মহলে সমাদৃত হবে বলে আমি আশা করি।
অধ্যাপক থানজামা লুসাই চেয়ারম্যান, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ।