ফ্ল্যাপে লিখা কথা আন্তন চেখভ (১৮৬০-১৯০৪) একজন কালজয়ী লেখক। কথাশিল্পী এবং নাট্যকার উভয়ত। কথাশিল্পী হিসাবে তাঁর গভীর জীবননিষ্ঠা, বাস্তববাদ, স্নিগ্ধ কৌতুকবোধ ও মনস্তাত্তিক পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা তাঁকে বিশ্বের প্রথম সারির গল্পকারে পরিণত করেছে।
আন্তন চেখভের সাহিত্যকর্মে যে বস্তু সত্যিকার পাঠক বা সমালোচকের দৃষ্টি অনিবার্যভাবে আকর্ষণ করে তা হলো তাঁর সততা, তাঁর করুণা, আর তাঁর ক্রোধ। সাহিত্যিক নিষ্ঠারয় আন্তন চেখভ অনন্য। যা নিয়ে তিনি লেখেন সে সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান প্রত্যক্ষ ও গভীর হালকাভঅবে চটুল ভঙ্গিতে শুধু লিখবার জন্য লেখা তাঁর সাহিত্যকর্মের অঙ্গীভূত নয়। সমাজের নানা স্তরের অন্যায় অবিচার তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন, তাঁকে গভীরভঅবে নাড়া দিয়েছে। ভঅগ্যবিড়ম্বিতের জন্য তাঁর মনে জন্ম দেয়, শোষণ করে, চিরস্থায়ী করে রাখতে চায়, তাদের প্রতি তার ক্রোধ দুর্দম। প্রগাঢ় জীবন বোধে আন্তন চেখভের সাহিত্য উদ্দীপ্ত।
জীবনের প্রতি চেখভের সর্বব্যাপী শ্রদ্ধা এবং বাস্তবকে অস্বীকার না করে কল্পনার রাজ্যে তাঁর স্বচ্ছন্দ বিহার, কি চরিত্র সৃষ্টিতে, কি ঘটনার পরিবেশনে, আন্তন চেখভের সাহিত্যকে একাধারে বাস্তব মুখীন ও কল্পনায় সুষমামণ্ডিত করেছে।
১৯৬৪ সালের ১৪ এপ্রিল দেবিদ্বার উপজেলার বারেরা গ্রামের বনেদী কাজি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্কুল, কলেজ এবং বিশ^বিদ্যালয়ে কৃতিমান ছাত্র ছিলেন এবং প্রথম শ্রেণীর সাথে অনার্সসহ এম.এ. ডিগ্রি এবং পরবর্তীতে বিশ^ভারতী বিশ^বিদ্যালয় থেকে রবীন্দ্রনাথের জীবনদর্শনের ওপর উচ্চতর গবেষণা সম্পন্ন করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসুর) সাবেক সাহিত্য সম্পাদক, সিনেট সদস্য, নন্দন পত্রিকার সম্পাদক এবং পরবর্তীতে দেশ বিদেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা, আমন্ত্রিত বক্তা, গবেষণা ও বিশেষজ্ঞতার ভূমিকায় সংযুক্ত ছিলেন। গল্প, উপন্যাস, অনুবাদ এবং প্রবন্ধ-গবেষণা, সাহিত্যতত্ত্ব, দর্শন, সংগীত, সংস্কৃতি, রাজনীতি, সমকালীন ঘটনার ঘাত-প্রতিঘাত প্রতিক্ষেত্রেই জুলফিকার নিউটনের সংবিৎ সক্রিয় ও সুপ্রকাশ। তাঁর গল্প-উপন্যাস যেমন প্রীতিপদ, অনুবাদ সাহিত্য যেমন সুখপ্রদ, প্রবন্ধ ও গবেষণা তেমনই কোন না কোন দিক থেকে চমকপ্রদ। সব সময়ই তাঁর আলোচনায় থাকে চিন্তাকে উসকে দেবার মত অজস্র উপাদান, নতুনতর দৃষ্টি কোন বিচারে উদ্বুদ্ধ করার মত ক্ষুরধার বিশ্লেষণ। জাতীয় ও আন্তজার্তিক ভিত্তিতে সাহিত্যে মৌলিক গবেষণা অনুবাদ ও জীবনবাদী সাহিত্য ও শিল্পকর্মের জন্য আনন্দমেলা, বাংলাদেশ সাহিত্য পরিষদ, রংধনু স্বর্ণপদক, রূপসী-বাংলা স্বর্ণপদক, বিদ্যাসাগর পুরস্কার, গান্ধী গবেষণা পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু একাডেমী, রবীন্দ্র পুরস্কার, নজরুল একাডেমী, সুভাষচন্দ্র পদক এবং কবীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেছেন।